الترجمة البنغالية
ترجمة معاني القرآن الكريم للغة البنغالية ترجمها د. أبو بكر محمد زكريا، نشرها مجمع الملك فهد لطباعة المصحف الشريف بالمدينة المنورة. عام الطبعة 1436هـ.﴿بَرَاءَةٌ مِنَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ إِلَى الَّذِينَ عَاهَدْتُمْ مِنَ الْمُشْرِكِينَ﴾
এটা সম্পর্কচ্ছেদ আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে, সে সব মুশরিকদের সাথে, যাদের সাথে তোমরা পারস্পারিক চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছিলে [১]
﴿فَسِيحُوا فِي الْأَرْضِ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَاعْلَمُوا أَنَّكُمْ غَيْرُ مُعْجِزِي اللَّهِ ۙ وَأَنَّ اللَّهَ مُخْزِي الْكَافِرِينَ﴾
অতঃপর তোমরা যমীনে চারমাস সময় পরিভ্রমন কর [১] এবং জেনে রাখ যে, তোমরা আল্লাহ্কে হীনবল করতে পারবে না। আর নিশ্চয় আল্লাহ্ কাফেরদেরকে আপদস্থকারী [২]।
﴿وَأَذَانٌ مِنَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ إِلَى النَّاسِ يَوْمَ الْحَجِّ الْأَكْبَرِ أَنَّ اللَّهَ بَرِيءٌ مِنَ الْمُشْرِكِينَ ۙ وَرَسُولُهُ ۚ فَإِنْ تُبْتُمْ فَهُوَ خَيْرٌ لَكُمْ ۖ وَإِنْ تَوَلَّيْتُمْ فَاعْلَمُوا أَنَّكُمْ غَيْرُ مُعْجِزِي اللَّهِ ۗ وَبَشِّرِ الَّذِينَ كَفَرُوا بِعَذَابٍ أَلِيمٍ﴾
আর মহান হজের দিনে [১] আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে মানুষের প্রতি এটা এক ঘোষণা যে, নিশ্চয় মুশরিকদের সম্পর্কে আল্লাহ্ দায়মুক্ত এবং তাঁর রাসূলও। অতএব তোমরা যদি তওবাহ্ কর তবে তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর তোমরা মুখ ফিরাও তবে জেনে রাখ যে, তোমরা আল্লাহ্কে অক্ষম করতে পারবে না এবং কাফেরদেরকে যন্ত্রণাদয়ক শাস্তির সুসংবাদ দিন।
﴿إِلَّا الَّذِينَ عَاهَدْتُمْ مِنَ الْمُشْرِكِينَ ثُمَّ لَمْ يَنْقُصُوكُمْ شَيْئًا وَلَمْ يُظَاهِرُوا عَلَيْكُمْ أَحَدًا فَأَتِمُّوا إِلَيْهِمْ عَهْدَهُمْ إِلَىٰ مُدَّتِهِمْ ۚ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُتَّقِينَ﴾
তবে মুশরিকদের মধ্যে যাদের সাথে তোমরা চুক্তিতে আবদ্ধ ও পরে তোমাদের চুক্তি রক্ষায় কোন ত্রুটি করেনি এবং তোমাদের বিরুদ্ধে কাউকেও সাহায্য করেনি [১] তোমরা তাদের সাথে নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত চুক্তি পূর্ণ কর; নিশ্চয় আল্লাহ্ মুত্তাকীদেরকে পছন্দ করেন [২]।
﴿فَإِذَا انْسَلَخَ الْأَشْهُرُ الْحُرُمُ فَاقْتُلُوا الْمُشْرِكِينَ حَيْثُ وَجَدْتُمُوهُمْ وَخُذُوهُمْ وَاحْصُرُوهُمْ وَاقْعُدُوا لَهُمْ كُلَّ مَرْصَدٍ ۚ فَإِنْ تَابُوا وَأَقَامُوا الصَّلَاةَ وَآتَوُا الزَّكَاةَ فَخَلُّوا سَبِيلَهُمْ ۚ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ﴾
অতঃপর নিষিদ্ধ মাস [১] অতিবাহিত হলে মুশরিকদেরকে যেখানে পাবে হত্যা কর [২], তাদেরকে পাকড়াও কর [৩], অবরোধ কর এবং প্রত্যেক ঘাঁটিতে তাদের জন্য ওঁৎ পেতে থাক; কিন্তু যদি তারা তাওবাহ্ করে, সালাত কায়েম করে এবং যাকাত দেয় [৪] তবে তাদের পথ ছেড়ে দাও [৫]; নিশ্চয় আল্লাহ্ অতিশয় ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু [৬]
﴿وَإِنْ أَحَدٌ مِنَ الْمُشْرِكِينَ اسْتَجَارَكَ فَأَجِرْهُ حَتَّىٰ يَسْمَعَ كَلَامَ اللَّهِ ثُمَّ أَبْلِغْهُ مَأْمَنَهُ ۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ قَوْمٌ لَا يَعْلَمُونَ﴾
আর মুশরিকদের মধ্যে কেউ আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করলে আপনি তাকে আশ্রয় দিন; যাতে সে আল্লাহ্র বাণী শুনতে পায় [১] তারপর তাকে তার নিরাপদ স্থানে পৌছিয়ে দিন [২]; কারণ তারা এমন এক সম্প্রদায় যারা জানে না।
﴿كَيْفَ يَكُونُ لِلْمُشْرِكِينَ عَهْدٌ عِنْدَ اللَّهِ وَعِنْدَ رَسُولِهِ إِلَّا الَّذِينَ عَاهَدْتُمْ عِنْدَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ ۖ فَمَا اسْتَقَامُوا لَكُمْ فَاسْتَقِيمُوا لَهُمْ ۚ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُتَّقِينَ﴾
আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের কছে মুশরিকদের চুক্তি কি করে বলবৎ থাকবে? তবে যাদের সাথে মসজিদুল হারামের সন্নিকটে [১] তোমরা পারস্পারিক চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছিলে, যতক্ষন তারা তোমাদের চুক্তিতে স্থির থাকবে তোমরাও তাদের চুক্তিতে স্থির থাকবে [২]; নিশ্চয় আল্লাহ্ মুত্তাকীদেরকে পছন্দ করেন।
﴿كَيْفَ وَإِنْ يَظْهَرُوا عَلَيْكُمْ لَا يَرْقُبُوا فِيكُمْ إِلًّا وَلَا ذِمَّةً ۚ يُرْضُونَكُمْ بِأَفْوَاهِهِمْ وَتَأْبَىٰ قُلُوبُهُمْ وَأَكْثَرُهُمْ فَاسِقُونَ﴾
কেমন করে চুক্তি বলবৎ থাকবে? অথচ তারা যদি তোমাদের উপর জয়ী হয়, তবে তারা তোমাদের আত্মীতার ও অঙ্গীকারের কোন মর্যাদা দেবে না তারা মুখে তোমাদেরকে সন্তুষ্ট রাখে; কিন্তু তাদের হৃদয় তা অস্বীকার করে; আর তাদের অধিকাংশই ফাসেক।
﴿اشْتَرَوْا بِآيَاتِ اللَّهِ ثَمَنًا قَلِيلًا فَصَدُّوا عَنْ سَبِيلِهِ ۚ إِنَّهُمْ سَاءَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ﴾
তারা আল্লাহ্র আয়াতকে তুচ্ছ মূল্যে বিক্রি করে দিয়েছে ফলে তারা লোকদেরকে তাঁর পথ থেকে নিবৃত্ত করেছে; নিশ্চয় তারা যা করেছে তা অতি নিকৃষ্ট !
﴿لَا يَرْقُبُونَ فِي مُؤْمِنٍ إِلًّا وَلَا ذِمَّةً ۚ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُعْتَدُونَ﴾
তারা কোন মুমিনের সাথে আত্মীয়তার ও অঙ্গীকারের মর্যাদা রক্ষা করে না আর তারাই সীমালংঘনকারী [১]।
﴿فَإِنْ تَابُوا وَأَقَامُوا الصَّلَاةَ وَآتَوُا الزَّكَاةَ فَإِخْوَانُكُمْ فِي الدِّينِ ۗ وَنُفَصِّلُ الْآيَاتِ لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ﴾
অতএব তারা যদি তাওবাহ্ করে, সালাত কায়েম করে ও যাকাত দেয় তবে দ্বীনের মধ্যে তারা তোমাদের ভাই [১]; আর আমরা আয়াতসমূহ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করি এমন সম্প্রদায়ের জন্য যারা জানে [২]।
﴿وَإِنْ نَكَثُوا أَيْمَانَهُمْ مِنْ بَعْدِ عَهْدِهِمْ وَطَعَنُوا فِي دِينِكُمْ فَقَاتِلُوا أَئِمَّةَ الْكُفْرِ ۙ إِنَّهُمْ لَا أَيْمَانَ لَهُمْ لَعَلَّهُمْ يَنْتَهُونَ﴾
আর যদি তারা তাদের চুক্তির পর তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে এবং তোমাদের দ্বীন সম্মন্ধে কটুক্তি করে [১], তবে কুফরের নেতাদের সাথে যুদ্ধ কর [২]; এরা এমন লোক যাদের কোন প্রতিশ্রুতি নেই [৩] যেন তারা নিবৃত হয় [৪]।
﴿أَلَا تُقَاتِلُونَ قَوْمًا نَكَثُوا أَيْمَانَهُمْ وَهَمُّوا بِإِخْرَاجِ الرَّسُولِ وَهُمْ بَدَءُوكُمْ أَوَّلَ مَرَّةٍ ۚ أَتَخْشَوْنَهُمْ ۚ فَاللَّهُ أَحَقُّ أَنْ تَخْشَوْهُ إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ﴾
তোমরা কি সে সম্প্রদায়ের সাথে যুদ্ধ করবে না, যারা নিজেদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে এবং রাসূলকে বের করে দেয়ার জন্য সংকল্প করেছে? আর তারাই প্রথম তোমাদের সাথে (যুদ্ধ) আরম্ভ করেছে [১]। তোমরা কি তাদেরকে ভয় কর? আল্লাহ্কে ভয় করাই তোমাদের পক্ষে বেশী সমীচীন যদি তোমরা মুমিন হও।
﴿قَاتِلُوهُمْ يُعَذِّبْهُمُ اللَّهُ بِأَيْدِيكُمْ وَيُخْزِهِمْ وَيَنْصُرْكُمْ عَلَيْهِمْ وَيَشْفِ صُدُورَ قَوْمٍ مُؤْمِنِينَ﴾
তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করবে। তোমাদের হাতে আল্লাহ্ তাদেরকে শাস্তি দেবেন, তাদেরকে অপদস্ত করবেন, তাদের উপর তোমাদেরকে বিজয়ী করেবেন এবং মুমিন সম্প্রদায়ের চিত্ত প্রশান্তি করবেন,
﴿وَيُذْهِبْ غَيْظَ قُلُوبِهِمْ ۗ وَيَتُوبُ اللَّهُ عَلَىٰ مَنْ يَشَاءُ ۗ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ﴾
আর তিনি তাদের [১] অন্তরের ক্ষোভ দূর করবেন এবং আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা তার তাওবা কবুল করবেন। আর আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
﴿أَمْ حَسِبْتُمْ أَنْ تُتْرَكُوا وَلَمَّا يَعْلَمِ اللَّهُ الَّذِينَ جَاهَدُوا مِنْكُمْ وَلَمْ يَتَّخِذُوا مِنْ دُونِ اللَّهِ وَلَا رَسُولِهِ وَلَا الْمُؤْمِنِينَ وَلِيجَةً ۚ وَاللَّهُ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ﴾
তোমরা কি মনে করেছ যে, তোমাদেরকে এমনি ছেড়ে দেয়া হবে অথচ এখনও আল্লাহ্ প্রকাশ করেননি যে, তোমাদের মধ্যে কারা জিহাদ করেছে এবং কারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল ও মুমিনগণ ছাড়া অন্য কাউকেও অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহন করেনি [১]? আর তোমরা যা কর, সে সম্মন্ধে আল্লাহ্ সবিশেষে অবহিত।
﴿مَا كَانَ لِلْمُشْرِكِينَ أَنْ يَعْمُرُوا مَسَاجِدَ اللَّهِ شَاهِدِينَ عَلَىٰ أَنْفُسِهِمْ بِالْكُفْرِ ۚ أُولَٰئِكَ حَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ وَفِي النَّارِ هُمْ خَالِدُونَ﴾
মুশরিকরা যখন নিজেরাই নিজেদের কুফরী স্বীকার করে তখন তারা আল্লাহ্র মসজিদসমূহের আবাদ করবে--- এমন হতে পারে না [১]। তারা এমন যাদের সব কাজই নষ্ট হয়েছে [২] এবং তারা আগুনেই স্থায়ীভাবে অবস্থান করবে।
﴿إِنَّمَا يَعْمُرُ مَسَاجِدَ اللَّهِ مَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَأَقَامَ الصَّلَاةَ وَآتَى الزَّكَاةَ وَلَمْ يَخْشَ إِلَّا اللَّهَ ۖ فَعَسَىٰ أُولَٰئِكَ أَنْ يَكُونُوا مِنَ الْمُهْتَدِينَ﴾
তারাই তো আল্লাহ্র মসজিদের আবাদ করবে [১], যারা ঈমান আনে আল্লাহ্ ও শেষ দিনের প্রতি, সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কাউকে ভয় করে না। অতএব আশা করা যায়, তারা হবে সৎপথ প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত [২]।
﴿۞ أَجَعَلْتُمْ سِقَايَةَ الْحَاجِّ وَعِمَارَةَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ كَمَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَجَاهَدَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ۚ لَا يَسْتَوُونَ عِنْدَ اللَّهِ ۗ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ﴾
হাজীদের জন্য পানি পান করানো ও মসজিদুল হারাম আবাদ করাকে তোমরা কি তার মত বিবেচনা কর, যে আল্লাহ্ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান এনেছে এবং আল্লাহ্র পথে জিহাদ করেছে [১]? তারা আল্লাহ্র কাছে সমান নয় [২]। আর আল্লাহ্ যলীম সম্প্রদায়কে হিদায়াত দেন না [৩]।
﴿الَّذِينَ آمَنُوا وَهَاجَرُوا وَجَاهَدُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ أَعْظَمُ دَرَجَةً عِنْدَ اللَّهِ ۚ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْفَائِزُونَ﴾
যারা ঈমান এনেছে, হিজরত করেছে এবং নিজেদের সম্পদ ও নিজেদের জীবন দ্বারা আল্লাহ্র পথে জিহাদ করেছে তারা আল্লাহ্র কাছে মর্যদায় শ্রেষ্ঠ। আর তারাই সফলকাম [১]।
﴿يُبَشِّرُهُمْ رَبُّهُمْ بِرَحْمَةٍ مِنْهُ وَرِضْوَانٍ وَجَنَّاتٍ لَهُمْ فِيهَا نَعِيمٌ مُقِيمٌ﴾
তাদের রব তাদেরকে সুসংবাদ দিচ্ছেন, স্বীয় দয়া ও সন্তোষের [১] এবং এমন জান্নাতের যেখানে আছে তাদের জন্য স্থায়ী নেয়ামত।
﴿خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا ۚ إِنَّ اللَّهَ عِنْدَهُ أَجْرٌ عَظِيمٌ﴾
সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে। নিশ্চয় আল্লাহ্র কাছে আছে মহাপুরস্কার [১]।
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا آبَاءَكُمْ وَإِخْوَانَكُمْ أَوْلِيَاءَ إِنِ اسْتَحَبُّوا الْكُفْرَ عَلَى الْإِيمَانِ ۚ وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ مِنْكُمْ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ﴾
হে ঈমানদারগণ ! তোমাদের পিতৃবর্গ ও ভাতৃবৃন্দ যদি ঈমানের মুকাবিলায় কুফরীকে পছন্দ করে, তবে তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহন করো না [১]। তোমাদের মধ্যে যারা তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহন করে তারাই যালিম।
﴿قُلْ إِنْ كَانَ آبَاؤُكُمْ وَأَبْنَاؤُكُمْ وَإِخْوَانُكُمْ وَأَزْوَاجُكُمْ وَعَشِيرَتُكُمْ وَأَمْوَالٌ اقْتَرَفْتُمُوهَا وَتِجَارَةٌ تَخْشَوْنَ كَسَادَهَا وَمَسَاكِنُ تَرْضَوْنَهَا أَحَبَّ إِلَيْكُمْ مِنَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ وَجِهَادٍ فِي سَبِيلِهِ فَتَرَبَّصُوا حَتَّىٰ يَأْتِيَ اللَّهُ بِأَمْرِهِ ۗ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْفَاسِقِينَ﴾
বলুন, ‘তোমাদের নিকট যদি আল্লাহ্, তাঁর রাসূল এবং তাঁর (আল্লাহ্র) পথে জিহাদ করারা চেয়ে বেশি প্রিয় হয় [১] তোমাদের পিতৃবর্গ, তোমাদের সন্তানেরা, তোমাদের ভ্রাতাগণ, তোমাদের স্ত্রীগণ, তোমাদের আপনগোষ্ঠী, তোমাদের অর্জিত সম্পদ, তোমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য যার মন্দা পড়ার আশংকা কর এবং তোমাদের বাসস্থান যা তোমার ভালবাস [২], তবে অপেক্ষা কর আল্লাহ্ তাঁর নির্দেশ নিয়ে আসা পর্যন্ত। [৩]’ আর আল্লাহ্ ফাসিক সম্প্রদায়কে হেদায়াত দেনা না [৪]।
﴿لَقَدْ نَصَرَكُمُ اللَّهُ فِي مَوَاطِنَ كَثِيرَةٍ ۙ وَيَوْمَ حُنَيْنٍ ۙ إِذْ أَعْجَبَتْكُمْ كَثْرَتُكُمْ فَلَمْ تُغْنِ عَنْكُمْ شَيْئًا وَضَاقَتْ عَلَيْكُمُ الْأَرْضُ بِمَا رَحُبَتْ ثُمَّ وَلَّيْتُمْ مُدْبِرِينَ﴾
অবশ্যই আল্লাহ্ তোমাদেরকে সাহায্য করেছেন বহু ক্ষেত্রে এবং হুনায়নের যুদ্ধের দিনে [১] যখন তোমাদেরকে উৎফুল্ল করেছিল তোমাদের সংখ্যাধিক্য হওয়া; কিন্তু তা তোমাদের কোন কাজে আসেনি এবং বিস্তৃত হওয়া সত্বেও যমীন তোমাদের জন্য সংকুচিত হয়েছিল। তারপর তোমরা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে পালিয়েছিলে [২]
﴿ثُمَّ أَنْزَلَ اللَّهُ سَكِينَتَهُ عَلَىٰ رَسُولِهِ وَعَلَى الْمُؤْمِنِينَ وَأَنْزَلَ جُنُودًا لَمْ تَرَوْهَا وَعَذَّبَ الَّذِينَ كَفَرُوا ۚ وَذَٰلِكَ جَزَاءُ الْكَافِرِينَ﴾
তারপর আল্লাহ্ তাঁর নিকট হতে তাঁর রাসূলের উপর ও মুমিনদের উপর প্রশান্তি নাযিল করেন [১] এবং এমন এক সৈন্যবাহিনী নাযিল করলেন যা তোমরা দেখতে পাওনি [২]। আর তিনি কাফেরদেরকে শাস্তি দিলেন; আর এটাই কাফেরদের প্রতিফল।
﴿ثُمَّ يَتُوبُ اللَّهُ مِنْ بَعْدِ ذَٰلِكَ عَلَىٰ مَنْ يَشَاءُ ۗ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَحِيمٌ﴾
এরপরও যার প্রতি ইচ্ছে আল্লাহ্ তার তাওবাহ্ কবুল করবেন; আর আল্লাহ্ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু [১]
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْمُشْرِكُونَ نَجَسٌ فَلَا يَقْرَبُوا الْمَسْجِدَ الْحَرَامَ بَعْدَ عَامِهِمْ هَٰذَا ۚ وَإِنْ خِفْتُمْ عَيْلَةً فَسَوْفَ يُغْنِيكُمُ اللَّهُ مِنْ فَضْلِهِ إِنْ شَاءَ ۚ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ حَكِيمٌ﴾
হে ঈমানদারগ্ণ ! মুশরিকরা তো অপবিত্র [১]; কাজেই এ বছরের পর [২] তারা যেন মসজিদুল হারামের ধারে-কাছে না আসে [৩]। আর যদি তোমরা দারিদ্রের আশংকা কর তবে আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে তাঁর নিজ করুণায় তোমাদেরকে অভাবমুক্ত করবেন [৪]। নিশ্চয় আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
﴿قَاتِلُوا الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَلَا بِالْيَوْمِ الْآخِرِ وَلَا يُحَرِّمُونَ مَا حَرَّمَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ وَلَا يَدِينُونَ دِينَ الْحَقِّ مِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ حَتَّىٰ يُعْطُوا الْجِزْيَةَ عَنْ يَدٍ وَهُمْ صَاغِرُونَ﴾
যাদেরকে কিতাব প্রদান করা হয়েছে [১] তাদের মধ্যে যারা আল্লাহ্তে ঈমান আনে না এবং শেষ দিনেও নয় এবং আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল যা হারাম করেছেন তা হারাম গণ্য করে না, আর সত্য দ্বীন অনুসরণ করে ন; তাদের সাথে যুদ্ধ কর [২], যে পর্যন্ত না তারা নত হয়ে নিজে ফাতে জিয্ইয়া [৩] দেয় [৪]।
﴿وَقَالَتِ الْيَهُودُ عُزَيْرٌ ابْنُ اللَّهِ وَقَالَتِ النَّصَارَى الْمَسِيحُ ابْنُ اللَّهِ ۖ ذَٰلِكَ قَوْلُهُمْ بِأَفْوَاهِهِمْ ۖ يُضَاهِئُونَ قَوْلَ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْ قَبْلُ ۚ قَاتَلَهُمُ اللَّهُ ۚ أَنَّىٰ يُؤْفَكُونَ﴾
আর ইয়াহূদীরা বলে, ‘উযাইর আল্লাহ্র পুত্র’ [১], এবং নাসারারা বলে, ‘ মসীহ্ আল্লাহ্র পুত্র।’ এটা তাদের মুখের কথা আগে যারা কুফরী করেছিল তারা তাদের মত কথা বলে। আল্লাহ্ তাদেরকে ধ্বংস করুন। কোন্ দিকে তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে [২]!
﴿اتَّخَذُوا أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللَّهِ وَالْمَسِيحَ ابْنَ مَرْيَمَ وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا إِلَٰهًا وَاحِدًا ۖ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ۚ سُبْحَانَهُ عَمَّا يُشْرِكُونَ﴾
তারা আল্লাহ্ ব্যতীত তাদের পন্ডিত ও সংসার-বিরাগিদের [১] কে তাদের রবরূপে গ্রহন করেছে [২] এবং মার্’ইয়াম- পুত্র মসীহ্ কেও। অথচ এক ইলাহের ‘ইবাদাত করার জন্যই তারা আদিষ্ট হয়েছিল। তিনি ব্যতীত অন্য কোন সত্য ইলাহ্ নাই। তারা যে শরীক করে তা থেকে তিনি কত না পবিত্র [৩]!
﴿يُرِيدُونَ أَنْ يُطْفِئُوا نُورَ اللَّهِ بِأَفْوَاهِهِمْ وَيَأْبَى اللَّهُ إِلَّا أَنْ يُتِمَّ نُورَهُ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُونَ﴾
তারা তাদের মুখের ফুৎকারে আল্লাহ্র নূরকে নিভিয়ে দিতে চায়। কিন্তু আল্লাহ্ তাঁর নূর পরিপূর্ণ করা ছাড়া কিছু করতে অস্বীকার করেছেন। যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে [১]।
﴿هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ رَسُولَهُ بِالْهُدَىٰ وَدِينِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّينِ كُلِّهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُشْرِكُونَ﴾
তিনিই সে সত্তা যিনি তাঁর রাসূলকে হিদায়াত ও সত্যদ্বীনসহ [১] পাঠিয়েছেন, যেন তিনি আর সব দ্বীনের উপর একে বিজয়ী করেন, যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে [২]।
﴿۞ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّ كَثِيرًا مِنَ الْأَحْبَارِ وَالرُّهْبَانِ لَيَأْكُلُونَ أَمْوَالَ النَّاسِ بِالْبَاطِلِ وَيَصُدُّونَ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ ۗ وَالَّذِينَ يَكْنِزُونَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ وَلَا يُنْفِقُونَهَا فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَبَشِّرْهُمْ بِعَذَابٍ أَلِيمٍ﴾
হে ঈমানদারগণ! পণ্ডিত এবং সংসার-বিরাগীদের মধ্যে অনেকেই তো জনসাধারণের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে খায় এবং মানুষকে আল্লাহ্র পথ থেকে নিবৃত্ত করে [১]। আর যারা স্বর্ণ ও রৌপ্য পুঞ্জীভূত করে এবং তা আল্লাহ্র পথে ব্যয় করে না [২] আপনি তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দিন [৩]।
﴿يَوْمَ يُحْمَىٰ عَلَيْهَا فِي نَارِ جَهَنَّمَ فَتُكْوَىٰ بِهَا جِبَاهُهُمْ وَجُنُوبُهُمْ وَظُهُورُهُمْ ۖ هَٰذَا مَا كَنَزْتُمْ لِأَنْفُسِكُمْ فَذُوقُوا مَا كُنْتُمْ تَكْنِزُونَ﴾
যেদিন জাহান্নামের আগুনে সেগুলোকে উত্তপ্ত করা হবে এবং সে সব দিয়ে তাদের কপাল, পাঁজর আর পিঠে দাগ দেয়া হবে, বলা হবে, ‘ এগুলোই তা যা তোমরা নিজেদের জন্য পুঞ্জীভূত করতে। কাজেই তোমরা যা পুঞ্জীভূত করেছিলে তার স্বাদ ভোগ কর [১]।’
﴿إِنَّ عِدَّةَ الشُّهُورِ عِنْدَ اللَّهِ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا فِي كِتَابِ اللَّهِ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ۚ ذَٰلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ ۚ فَلَا تَظْلِمُوا فِيهِنَّ أَنْفُسَكُمْ ۚ وَقَاتِلُوا الْمُشْرِكِينَ كَافَّةً كَمَا يُقَاتِلُونَكُمْ كَافَّةً ۚ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ مَعَ الْمُتَّقِينَ﴾
নিশ্চয় আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টির দিন থেকেই [১] আল্লাহ্র বিধানে [২] আল্লাহ্র কাছে গণনায় মাস বারটি [৩], তার মধ্যে চারটি নিষিদ্ধ মাস [৪], এটাই প্রতিষ্ঠিত দ্বীন [৫]। কাজেই এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি যুলুম করো না এবং তোমরা মুশরিকদের সাথে সর্বাত্মকভাবে যুদ্ধ কর, যেমন তারা তোমাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মকভাবে যুদ্ধ করে থাকে। আর জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহ্ মুত্তাকীদের সাথে আছেন
﴿إِنَّمَا النَّسِيءُ زِيَادَةٌ فِي الْكُفْرِ ۖ يُضَلُّ بِهِ الَّذِينَ كَفَرُوا يُحِلُّونَهُ عَامًا وَيُحَرِّمُونَهُ عَامًا لِيُوَاطِئُوا عِدَّةَ مَا حَرَّمَ اللَّهُ فَيُحِلُّوا مَا حَرَّمَ اللَّهُ ۚ زُيِّنَ لَهُمْ سُوءُ أَعْمَالِهِمْ ۗ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْكَافِرِينَ﴾
কোন মাসকে পিছিয়ে দেয়া তো শুধু কুফরীতে বৃদ্ধি সাধন করা, যা দিয়ে কাফেরদেরকে বিভ্রান্ত করা হয়। তারা এটাকে কোন বছর বৈধ করে এবং কোন বছর অবৈধ করে যাতে তারা, আল্লাহ্ যেগুলোকে নিষিদ্ধ করেছেন, সেগুলোর গণনা পূর্ণ করতে পারে, ফলে আল্লাহ্ যা হারাম করেছেন তা হালাল করে। তাদের মন্দ কাজগুলো তাদের জন্য শোভনীয় করা হয়েছে; আর আল্লাহ্ কাফের সম্প্রদায়কে হিদায়াত দেন না।
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا مَا لَكُمْ إِذَا قِيلَ لَكُمُ انْفِرُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ اثَّاقَلْتُمْ إِلَى الْأَرْضِ ۚ أَرَضِيتُمْ بِالْحَيَاةِ الدُّنْيَا مِنَ الْآخِرَةِ ۚ فَمَا مَتَاعُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا فِي الْآخِرَةِ إِلَّا قَلِيلٌ﴾
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের কি হল যে, যখন তোমাদেরকে আল্লাহ্র পথে অভিযানে বের হতে বলা হয়, তখন তোমরা ভারাক্রান্ত হয়ে যমীনে ঝুঁকে পড়ে? তোমরা কি আখেরাতের পরিবর্তে দুনিয়ার জীবনে পরিতুষ্ট হয়েছ? আখেরাতের তুলনায় দুনিয়ার জীবনের ভোগের উপকরণ তো নগণ্য [১]।
﴿إِلَّا تَنْفِرُوا يُعَذِّبْكُمْ عَذَابًا أَلِيمًا وَيَسْتَبْدِلْ قَوْمًا غَيْرَكُمْ وَلَا تَضُرُّوهُ شَيْئًا ۗ وَاللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ﴾
যদি তোমরা অভিযানে বের না হও, তবে তিনি তোমাদেরকে যন্ত্রণাদয়ক শাস্তি দেবেন এবং অন্য জাতিকে তোমাদের পরিবর্তে আনয়ন করবেন এবং তোমরা তাঁর কোনই ক্ষতি করতে পারবে না। আর আল্লাহ্ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান [১]।
﴿إِلَّا تَنْصُرُوهُ فَقَدْ نَصَرَهُ اللَّهُ إِذْ أَخْرَجَهُ الَّذِينَ كَفَرُوا ثَانِيَ اثْنَيْنِ إِذْ هُمَا فِي الْغَارِ إِذْ يَقُولُ لِصَاحِبِهِ لَا تَحْزَنْ إِنَّ اللَّهَ مَعَنَا ۖ فَأَنْزَلَ اللَّهُ سَكِينَتَهُ عَلَيْهِ وَأَيَّدَهُ بِجُنُودٍ لَمْ تَرَوْهَا وَجَعَلَ كَلِمَةَ الَّذِينَ كَفَرُوا السُّفْلَىٰ ۗ وَكَلِمَةُ اللَّهِ هِيَ الْعُلْيَا ۗ وَاللَّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٌ﴾
যদি তোমরা তাঁকে সাহায্য না কর, তবে আল্লাহ্ তো তাঁকে সাহায্য করেছিলেন যখন কাফেরেরা তাঁকে বহিস্কার করেছিল এবং তিনি ছিলেন দুজনের দ্বিতীয়জন, যখন তারা উভয়ে গুহার মধ্যে ছিল; তিনি তখন তাঁরা সঙ্গীকে বলেছিলেন, ‘বিষন্ন হয়ো না, আল্লাহ্ তো আমাদের সাথে আছেন।’ অতঃপর আল্লাহ্ তার উপর তাঁর প্রশান্তি নাযিল করেন এবং তাঁকে শক্তিশালী করেন এমন এক সৈন্যবাহিনী দ্বারা যা তোমরা দেখনি এবং তিনি কাফেরদের কথা হেয় করেন। আর আল্লাহ্র কথাই সমুন্নত এবং আল্লাহ্ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় [১]।
﴿انْفِرُوا خِفَافًا وَثِقَالًا وَجَاهِدُوا بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنْفُسِكُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ۚ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ﴾
অভিযানে বের হয়ে পড়, হালকা অবস্থায় হোক বা ভারি অবস্থায় এবং জিহাদ কর আল্লাহ্র পথে তোমাদের সম্পদ ও জীবন দ্বারা। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে [১]!
﴿لَوْ كَانَ عَرَضًا قَرِيبًا وَسَفَرًا قَاصِدًا لَاتَّبَعُوكَ وَلَٰكِنْ بَعُدَتْ عَلَيْهِمُ الشُّقَّةُ ۚ وَسَيَحْلِفُونَ بِاللَّهِ لَوِ اسْتَطَعْنَا لَخَرَجْنَا مَعَكُمْ يُهْلِكُونَ أَنْفُسَهُمْ وَاللَّهُ يَعْلَمُ إِنَّهُمْ لَكَاذِبُونَ﴾
যদি সহজে সম্পদ লাভের আশা থাকত ও সফর সহজ হত তবে তারা অবশ্যই আপনার অনুসরণ করত, কিন্তু তাদের কাছে যাত্রাপথ সুদীর্ঘ মনে হল। আর অচিরেই তারা আল্লাহ্র নামে শপথ করে বলবে, ‘পারলে আমরা নিশ্চই তোমাদের সাথে বের হতাম।‘ তারা তাদের নিজেদেরকেই ধ্বংস করে। আর আল্লাহ্ জানেন নিশ্চয় তারা মিথ্যাবাদী [১]।
﴿عَفَا اللَّهُ عَنْكَ لِمَ أَذِنْتَ لَهُمْ حَتَّىٰ يَتَبَيَّنَ لَكَ الَّذِينَ صَدَقُوا وَتَعْلَمَ الْكَاذِبِينَ﴾
আল্লাহ্ আপনাকে ক্ষমা করেছেন। কারা সত্যবাদী তা আপনার কাছে স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত এবং কারা মিথ্যাবাদী তা না জানা পর্যন্ত আপনি কেন তাদেরকে অব্যাহতি দিলেন?
﴿لَا يَسْتَأْذِنُكَ الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ أَنْ يُجَاهِدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ ۗ وَاللَّهُ عَلِيمٌ بِالْمُتَّقِينَ﴾
যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে তারা নিজ সম্পদ ও জীবন দ্বারা জিহাদে যেতে আপনার কাছে অব্যাহতি প্রার্থনা করে না। আর আল্লাহ্ মুত্তাকীদের সম্বন্ধে সবিশেষ অবগত।
﴿إِنَّمَا يَسْتَأْذِنُكَ الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَارْتَابَتْ قُلُوبُهُمْ فَهُمْ فِي رَيْبِهِمْ يَتَرَدَّدُونَ﴾
আপনার কাছে অব্যাহতি প্রার্থনা করে শুধু তারাই যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে না। আর তাদের অন্তরসমূহ সংশয়গ্রস্ত হয়ে গেছে, সুতরাং তারা আপন সংশয়ে দ্বিধাগ্রস্ত।
﴿۞ وَلَوْ أَرَادُوا الْخُرُوجَ لَأَعَدُّوا لَهُ عُدَّةً وَلَٰكِنْ كَرِهَ اللَّهُ انْبِعَاثَهُمْ فَثَبَّطَهُمْ وَقِيلَ اقْعُدُوا مَعَ الْقَاعِدِينَ﴾
আর যদি তারা বের হতে চাইত তবে অবশ্যই তারা সে জন্য প্রস্তুতির ব্যবস্থা করত, কিন্তু তাদের অভিযাত্রা আল্লাহ্ অপছন্দ করলেন। কাজেই তিনি তাদেরকে অলসতার মাধ্যমে বিরত রাখেন এবং তাদেরকে বলা হল, ‘যারা বসে আছে তাদের সাথে বসে থাক।‘
﴿لَوْ خَرَجُوا فِيكُمْ مَا زَادُوكُمْ إِلَّا خَبَالًا وَلَأَوْضَعُوا خِلَالَكُمْ يَبْغُونَكُمُ الْفِتْنَةَ وَفِيكُمْ سَمَّاعُونَ لَهُمْ ۗ وَاللَّهُ عَلِيمٌ بِالظَّالِمِينَ﴾
যদি তারা তোমাদের সাথে বের হত, তবে তোমাদের ফাসাদই বৃদ্ধি করত এবং ফিৎনা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে তোমাদের মধ্যে ছুটোছুটি করত। আর তোমাদের মধ্যে তাদের জন্য কথা শুনার লোক রয়েছে [১]। আর আল্লাহ্ যালিমদের সম্বন্ধে সবিশেষ অবগত।
﴿لَقَدِ ابْتَغَوُا الْفِتْنَةَ مِنْ قَبْلُ وَقَلَّبُوا لَكَ الْأُمُورَ حَتَّىٰ جَاءَ الْحَقُّ وَظَهَرَ أَمْرُ اللَّهِ وَهُمْ كَارِهُونَ﴾
অবশ্য তারা আগেও [১] ফিৎনা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল এবং তারা আপনার বহু কাজে ওলট-পালট করেছিল, অবশেষে সত্যের আগমন ঘটল এবং আল্লাহ্র হুকুম বিজয়ী হল [২], অথচ তারা ছিল অপছন্দকারী।
﴿وَمِنْهُمْ مَنْ يَقُولُ ائْذَنْ لِي وَلَا تَفْتِنِّي ۚ أَلَا فِي الْفِتْنَةِ سَقَطُوا ۗ وَإِنَّ جَهَنَّمَ لَمُحِيطَةٌ بِالْكَافِرِينَ﴾
আর তাদের মধ্যে এমন লোক আছে যে বলে, ‘আমাকে অব্যাহতি দিন এবং আমাকে ফিৎনায় ফেলবেন না।‘ সাবধান! তারাই ফিৎনাতে পড়ে আছে [১]। আর জাহান্নাম তো কাফেরদের বেষ্টন করেই আছে [২]।
﴿إِنْ تُصِبْكَ حَسَنَةٌ تَسُؤْهُمْ ۖ وَإِنْ تُصِبْكَ مُصِيبَةٌ يَقُولُوا قَدْ أَخَذْنَا أَمْرَنَا مِنْ قَبْلُ وَيَتَوَلَّوْا وَهُمْ فَرِحُونَ﴾
আপনার মঙ্গল হলে তা তাদেরকে কষ্ট দেয়, আর আপনার বিপদ ঘটলে তারা বলে, ‘ আমরা তো আগেই আমাদের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করেছিলাম’ এবং তারা উৎফুল্ল চিত্তে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
﴿قُلْ لَنْ يُصِيبَنَا إِلَّا مَا كَتَبَ اللَّهُ لَنَا هُوَ مَوْلَانَا ۚ وَعَلَى اللَّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُونَ﴾
বলুন, ‘আমাদের জন্য আল্লাহ্ যা লিখেছেন তা ছাড়া আমাদের অন্য কিছু ঘটবে না; তিনি আমাদের অভিভাবক। আর আল্লাহ্র উপরই মুমিনদের নির্ভর করা উচিত [১]।
﴿قُلْ هَلْ تَرَبَّصُونَ بِنَا إِلَّا إِحْدَى الْحُسْنَيَيْنِ ۖ وَنَحْنُ نَتَرَبَّصُ بِكُمْ أَنْ يُصِيبَكُمُ اللَّهُ بِعَذَابٍ مِنْ عِنْدِهِ أَوْ بِأَيْدِينَا ۖ فَتَرَبَّصُوا إِنَّا مَعَكُمْ مُتَرَبِّصُونَ﴾
বলুন, ‘তোমরা আমাদের দুটি মঙ্গলের একটির জন্য প্রতীক্ষা করছ এবং আমরা প্রতীক্ষা করছি যে, আল্লাহ্ তোমাদেরকে শাস্তি দেবেন সরাসরি নিজ পক্ষ থেকে অথবা আমাদের হাত দ্বারা। অতএব তোমরা প্রতীক্ষা কর, আমরাও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষা করছি [১]।
﴿قُلْ أَنْفِقُوا طَوْعًا أَوْ كَرْهًا لَنْ يُتَقَبَّلَ مِنْكُمْ ۖ إِنَّكُمْ كُنْتُمْ قَوْمًا فَاسِقِينَ﴾
বলুন, ‘ তোমার ইচ্ছাকৃত ব্যয় কর অথবা অনিচ্ছাকৃত, তোমাদের কাছে থেকে তা কিছুতেই গ্রহণ করা হবে না; নিশ্চয় তোমরা হচ্ছ ফাসিক সম্প্রদায়।’
﴿وَمَا مَنَعَهُمْ أَنْ تُقْبَلَ مِنْهُمْ نَفَقَاتُهُمْ إِلَّا أَنَّهُمْ كَفَرُوا بِاللَّهِ وَبِرَسُولِهِ وَلَا يَأْتُونَ الصَّلَاةَ إِلَّا وَهُمْ كُسَالَىٰ وَلَا يُنْفِقُونَ إِلَّا وَهُمْ كَارِهُونَ﴾
আর তাদের অর্থসাহায্য গ্রহন করা নিষেধ করা হয়েছে এজন্যেই যে, তারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের সাথে কুফরী করেছে [১] এবং সালাতে উপস্থিত হয় কেবল শৈথিল্যের সাথে, আর অর্থসাহায্য করে কেবল অনিচ্ছাকৃতভাবে [২]।
﴿فَلَا تُعْجِبْكَ أَمْوَالُهُمْ وَلَا أَوْلَادُهُمْ ۚ إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُعَذِّبَهُمْ بِهَا فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَتَزْهَقَ أَنْفُسُهُمْ وَهُمْ كَافِرُونَ﴾
কাজেই তাদের সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি আপনাকে যেন বিমুগ্ধ না করে, আল্লাহ্ তো এসবের দ্বারাই তাদেরকে দুনিয়ার জীবনে শাস্তি দিতে চান। আর তাদের আত্মা দেহত্যাগ করবে কাফের থাকা অবস্থায় [১]।
﴿وَيَحْلِفُونَ بِاللَّهِ إِنَّهُمْ لَمِنْكُمْ وَمَا هُمْ مِنْكُمْ وَلَٰكِنَّهُمْ قَوْمٌ يَفْرَقُونَ﴾
আর তারা আল্লাহ্র নামে শপথ করে যে, তারা তোমাদেরই অন্তর্ভুক্ত, অথচ তারা তোমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়, বস্তুত তারা এমন এক সম্প্রদায়ের যারা ভয় করে থাকে।
﴿لَوْ يَجِدُونَ مَلْجَأً أَوْ مَغَارَاتٍ أَوْ مُدَّخَلًا لَوَلَّوْا إِلَيْهِ وَهُمْ يَجْمَحُونَ﴾
তারা কোন আশ্রয়স্থল, কোন গিরিগুহা অথবা লুকিয়ে থাকার কোন প্রবেশস্থল পেলে সেদিকেই পালিয়ে যাবে দ্রুততার সাথে।
﴿وَمِنْهُمْ مَنْ يَلْمِزُكَ فِي الصَّدَقَاتِ فَإِنْ أُعْطُوا مِنْهَا رَضُوا وَإِنْ لَمْ يُعْطَوْا مِنْهَا إِذَا هُمْ يَسْخَطُونَ﴾
আর তাদের মধ্যে এমন লোক আছে, যে সদকা বন্টন সম্পর্কে আপনাকে দোষারোপ করে, তারপর এর কিছু তাদেরকে দেয়া হলে [১] তারা সন্তুষ্ট হয়, আর এর কিছু তাদেরকে না দেয়া হলে সাথে সাথেই তারা বিক্ষুদ্ধ হয়।
﴿وَلَوْ أَنَّهُمْ رَضُوا مَا آتَاهُمُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ وَقَالُوا حَسْبُنَا اللَّهُ سَيُؤْتِينَا اللَّهُ مِنْ فَضْلِهِ وَرَسُولُهُ إِنَّا إِلَى اللَّهِ رَاغِبُونَ﴾
আর ভাল হত যদি আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল তাদেরকে যা দিয়েছেন তাতে সন্তুষ্ট হত এবং বলত, ‘ আল্লাহ্ই আমাদের জন্য যথেষ্ট, অচিরেই আল্লাহ্ আমাদেরকে দেবেন নিজ করুণায় ও তাঁর রাসূলও; নিশ্চয় আমরা আল্লাহ্রই প্রতি অনুরক্ত।
﴿۞ إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاءِ وَالْمَسَاكِينِ وَالْعَامِلِينَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمْ وَفِي الرِّقَابِ وَالْغَارِمِينَ وَفِي سَبِيلِ اللَّهِ وَابْنِ السَّبِيلِ ۖ فَرِيضَةً مِنَ اللَّهِ ۗ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ﴾
সদকা [১] তো শুধু [২] ফকীর, মিসকীন [৩] ও সদকা আদায়ের কাজে নিযুক্ত কর্মচারীদের জন্য [৪], যাদের অন্তর আকৃষ্ট করতে হয় তাদের জন্য [৫], দাসমুক্তিতে [৬], ঋণ ভারাক্রান্তদের জন্য [৭], আল্লাহ্র পথে [৮] ও মুসাফিরদের [৯] জন্য। এটা আল্লাহ্র পক্ষ থেকে নির্ধারিত [১০]। আর আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময় [১১]।
﴿وَمِنْهُمُ الَّذِينَ يُؤْذُونَ النَّبِيَّ وَيَقُولُونَ هُوَ أُذُنٌ ۚ قُلْ أُذُنُ خَيْرٍ لَكُمْ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَيُؤْمِنُ لِلْمُؤْمِنِينَ وَرَحْمَةٌ لِلَّذِينَ آمَنُوا مِنْكُمْ ۚ وَالَّذِينَ يُؤْذُونَ رَسُولَ اللَّهِ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ﴾
আর তাদের মধ্যে এমন লোকও আছে যারা নবীকে কষ্ট দেয় এবং বলে, ‘সে তো কর্ণপাতকারী।’ বলুন, ‘তাঁর কান তোমাদের জন্য যা মঙ্গল তা-ই শুনে।‘ তিনি আল্লাহ্র উপর ঈমান আনেন এবং মুমিনদেরকে বিশ্বাস করে; আর তোমাদের মধ্যে যারা ঈমানদার তিনি তাদের জন্য রহমত। আর যারা আল্লাহ্র রাসূলকে কষ্ট দেয় তাদের জন্য আছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি [১]।
﴿يَحْلِفُونَ بِاللَّهِ لَكُمْ لِيُرْضُوكُمْ وَاللَّهُ وَرَسُولُهُ أَحَقُّ أَنْ يُرْضُوهُ إِنْ كَانُوا مُؤْمِنِينَ﴾
তারা তোমাদেরকে সন্তষ্ট করার জন্য তোমাদের কাছে আল্লাহ্র শপথ করে [১]। অথচ আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলই এর বেশি হকদার যে, তারা তাঁদেরকেই সন্তুষ্ট করবে [২], যদি তারা মুমিন হয়।
﴿أَلَمْ يَعْلَمُوا أَنَّهُ مَنْ يُحَادِدِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَأَنَّ لَهُ نَارَ جَهَنَّمَ خَالِدًا فِيهَا ۚ ذَٰلِكَ الْخِزْيُ الْعَظِيمُ﴾
তারা কি জানে না যে, যে ব্যক্তি আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করে [১] তার জন্য তো আছে জাহান্নামের আগুন, যেখানে সে স্থায়ী হবে? এটাই চরম লাঞ্ছনা।
﴿يَحْذَرُ الْمُنَافِقُونَ أَنْ تُنَزَّلَ عَلَيْهِمْ سُورَةٌ تُنَبِّئُهُمْ بِمَا فِي قُلُوبِهِمْ ۚ قُلِ اسْتَهْزِئُوا إِنَّ اللَّهَ مُخْرِجٌ مَا تَحْذَرُونَ﴾
মুনাফেকরা ভয় করে, তাদের সম্পর্কে এমন এক সূরা না নাযিল হয়, যা ওদের অন্তরের কথা ব্যক্ত করে দেবে [১]! বলুন, ‘তোমরা বিদ্রূপ করতে থাক; তোমরা যা ভয় কর নিশ্চয় আল্লাহ্ তা বের করে দেবেন।‘
﴿وَلَئِنْ سَأَلْتَهُمْ لَيَقُولُنَّ إِنَّمَا كُنَّا نَخُوضُ وَنَلْعَبُ ۚ قُلْ أَبِاللَّهِ وَآيَاتِهِ وَرَسُولِهِ كُنْتُمْ تَسْتَهْزِئُونَ﴾
আর আপনি তাদেরকে প্রশ্ন করলে অবশ্যই তারা বলবে, ‘আমর তো আলাপ-আলোচনা ও খেলা-তামাশা করছিলাম।‘ বলুন, ‘তোমরা কি আল্লাহ্, তাঁর আয়াতসমূহ ও তাঁর রাসূলকে বিদ্রূপ করছিলে [১]?’
﴿لَا تَعْتَذِرُوا قَدْ كَفَرْتُمْ بَعْدَ إِيمَانِكُمْ ۚ إِنْ نَعْفُ عَنْ طَائِفَةٍ مِنْكُمْ نُعَذِّبْ طَائِفَةً بِأَنَّهُمْ كَانُوا مُجْرِمِينَ﴾
‘তোমরা ওজর পেশ করো না। তোমরা তোম ঈমান আনার পর কুফরী করেছ। আমরা তোমাদের মধ্যে কোন দলকে ক্ষমা করলেও অন্য দলকে শাস্তি দেব---কারণ তারা অপরাধী [১]।
﴿الْمُنَافِقُونَ وَالْمُنَافِقَاتُ بَعْضُهُمْ مِنْ بَعْضٍ ۚ يَأْمُرُونَ بِالْمُنْكَرِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمَعْرُوفِ وَيَقْبِضُونَ أَيْدِيَهُمْ ۚ نَسُوا اللَّهَ فَنَسِيَهُمْ ۗ إِنَّ الْمُنَافِقِينَ هُمُ الْفَاسِقُونَ﴾
মুনাফেক পুরুষ ও মুনাফেক নারী একে অপরের অংশ, তারা অসৎকাজের নির্দেশ দেয় এবং সৎকাজে নিষেধ করে, তারা তাদের হাত গুটিয়ে রাখে, তারা আল্লাহ্ কে ভুলে গিয়েছে, ফলে তিনিও তাদেরকে ছেড়ে দিয়েছেন; মুনাফেকরা তো ফাসিক।
﴿وَعَدَ اللَّهُ الْمُنَافِقِينَ وَالْمُنَافِقَاتِ وَالْكُفَّارَ نَارَ جَهَنَّمَ خَالِدِينَ فِيهَا ۚ هِيَ حَسْبُهُمْ ۚ وَلَعَنَهُمُ اللَّهُ ۖ وَلَهُمْ عَذَابٌ مُقِيمٌ﴾
মুনাফেক পুরুষ, মুনাফেক নারী ও কাফেরদেরকে আল্লাহ্ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জাহান্নামের আগুনের, যেখানে তারা স্থায়ী হবে, এটাই তাদেরকে লা’নত করেছেন এবং তাদের জন্য রয়েছে স্থায়ী শাস্তি;
﴿كَالَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ كَانُوا أَشَدَّ مِنْكُمْ قُوَّةً وَأَكْثَرَ أَمْوَالًا وَأَوْلَادًا فَاسْتَمْتَعُوا بِخَلَاقِهِمْ فَاسْتَمْتَعْتُمْ بِخَلَاقِكُمْ كَمَا اسْتَمْتَعَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ بِخَلَاقِهِمْ وَخُضْتُمْ كَالَّذِي خَاضُوا ۚ أُولَٰئِكَ حَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ ۖ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْخَاسِرُونَ﴾
তাদের মত, যারা তোমাদের পূর্বে ছিল, তারা শক্তিতে তোমাদের চেয়ে প্রবল ছিল এবং তাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি ছিল তোমাদের চেয়ে বেশী। অতঃপর তারা তাদের ভাগ্যে যা ছিল তা ভোগ করেছে; আর তোমরাও তোমাদের ভগ্যে যা ছিল তা ভোগ করলে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীরা তাদের ভাগ্যে যা ছিল তা ভোগ করেছে। আর তোমরাও সেরূপ অনর্থক আলাপ-আলোচনায় লিপ্ত রয়েছ যেরূপ অনর্থক আলাপ-আলোচনায় তারা লিপ্ত ছিল [১]। ওরা তারাই যাদের আমল দুনিয়া ও আখেরাতে নিস্ফল হয়ে গিয়েছে, আর তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।
﴿أَلَمْ يَأْتِهِمْ نَبَأُ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ قَوْمِ نُوحٍ وَعَادٍ وَثَمُودَ وَقَوْمِ إِبْرَاهِيمَ وَأَصْحَابِ مَدْيَنَ وَالْمُؤْتَفِكَاتِ ۚ أَتَتْهُمْ رُسُلُهُمْ بِالْبَيِّنَاتِ ۖ فَمَا كَانَ اللَّهُ لِيَظْلِمَهُمْ وَلَٰكِنْ كَانُوا أَنْفُسَهُمْ يَظْلِمُونَ﴾
তাদের পূর্ববর্তী নূহ, ‘আদ ও সামূদের সম্প্রদায়, ইবরাহীমের সম্প্রদায় এবং মাদ্ইয়ান ও বিধ্বস্ত নগরের অধিবাসীদের সংবাদ কি তাদের কাছে আসেনি? তাদের কাছে স্পষ্ট প্রমাণাদিসহ তাদের রাসূলগণ এসেছিলেন। অতএব, আল্লাহ্ এমন নন যে, তাদের উপর যুলম করেন, কিন্তু তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি যুলুম করছিল।
﴿وَالْمُؤْمِنُونَ وَالْمُؤْمِنَاتُ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ ۚ يَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَيُقِيمُونَ الصَّلَاةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَيُطِيعُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ ۚ أُولَٰئِكَ سَيَرْحَمُهُمُ اللَّهُ ۗ إِنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌ﴾
আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী একে অপরের বন্ধু [১], তারা সৎকাজের নির্দেশ দেয় ও অসৎকাজে নিষেধ করে, সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে; তারাই, যাদেরকে আল্লাহ্ অচিরেই দয়া করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ্ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
﴿وَعَدَ اللَّهُ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَمَسَاكِنَ طَيِّبَةً فِي جَنَّاتِ عَدْنٍ ۚ وَرِضْوَانٌ مِنَ اللَّهِ أَكْبَرُ ۚ ذَٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ﴾
আল্লাহ্ মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জান্নাতের---যার নিচে নদীসমূহ প্রবাহিত, সেখানে তারা স্থায়ী হবে। আরও (ওয়াদা দিচ্ছেন) স্থায়ী জান্নাতসমূহে উত্তম বাসস্থানের [১]। আর আল্লাহ্র সন্তুষ্টিই সর্বশ্রেষ্ঠ এবং এটাই মহাসাফল্য।
﴿يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ جَاهِدِ الْكُفَّارَ وَالْمُنَافِقِينَ وَاغْلُظْ عَلَيْهِمْ ۚ وَمَأْوَاهُمْ جَهَنَّمُ ۖ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ﴾
হে নবী ! কাফের ও মুনাফেকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করুন [১], তাদের প্রতি কঠোর হোন [২]; এবং তাদের আবাসস্থল জাহান্নাম, আর তা কত নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তন স্থল !
﴿يَحْلِفُونَ بِاللَّهِ مَا قَالُوا وَلَقَدْ قَالُوا كَلِمَةَ الْكُفْرِ وَكَفَرُوا بَعْدَ إِسْلَامِهِمْ وَهَمُّوا بِمَا لَمْ يَنَالُوا ۚ وَمَا نَقَمُوا إِلَّا أَنْ أَغْنَاهُمُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ مِنْ فَضْلِهِ ۚ فَإِنْ يَتُوبُوا يَكُ خَيْرًا لَهُمْ ۖ وَإِنْ يَتَوَلَّوْا يُعَذِّبْهُمُ اللَّهُ عَذَابًا أَلِيمًا فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ ۚ وَمَا لَهُمْ فِي الْأَرْضِ مِنْ وَلِيٍّ وَلَا نَصِيرٍ﴾
তারা আল্লাহ্র শপথ করে যে, তারা কিছু বলেনি [১]; অথচ তারা তো কুফরী বাক্য বলেছে এবং ইসলাম গ্রহণের পর তারা কুফরী করেছে; আর তারা এমন কিছুর সংকল্প করেছিল যা তারা পায়নি। আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করেছিলেন বলেই বিরোধিতা করেছিল [২]। অতঃপর তারা তাওবাহ্ করলে তা তাদের জন্য ভাল হবে, আর তারা মুখ ফিরিয়ে নিলে আল্লাহ্ দুনিয়া ও আখেরাতে তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দেবেন; আর যমীনে তাদের কোন অভিভাবক নেই এবং কোন সাহায্যকারীও নেই।
﴿۞ وَمِنْهُمْ مَنْ عَاهَدَ اللَّهَ لَئِنْ آتَانَا مِنْ فَضْلِهِ لَنَصَّدَّقَنَّ وَلَنَكُونَنَّ مِنَ الصَّالِحِينَ﴾
আর তাদের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহ্র কাছে অঙ্গীকার করেছিল, ‘আল্লাহ্ নিজে কৃপায় আমাদেরকে দান করলে আমরা অবশ্যই সদকা দেব এবং অবশ্যই সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হবে।‘
﴿فَلَمَّا آتَاهُمْ مِنْ فَضْلِهِ بَخِلُوا بِهِ وَتَوَلَّوْا وَهُمْ مُعْرِضُونَ﴾
অতঃপর যখন তিনি তাদেরকে নিজে অনুগ্রহ হতে দান করলেন, তখন তারা এ বিষয়ে কার্পণ্য করল এবং বিমুখ হয়ে ফিরে গেল।
﴿فَأَعْقَبَهُمْ نِفَاقًا فِي قُلُوبِهِمْ إِلَىٰ يَوْمِ يَلْقَوْنَهُ بِمَا أَخْلَفُوا اللَّهَ مَا وَعَدُوهُ وَبِمَا كَانُوا يَكْذِبُونَ﴾
পরিণামে তিনি তাদের অন্তরে মুনাফেকী রেখে দিলেন [১] আল্লাহ্র সাথে তাদের সাক্ষাতের দিন পর্যন্ত, তারা আল্লাহ্র কাছে যে অঙ্গীকার করেছিল তার ভঙ্গ করার কারণে এবং তারা যে মিথ্যা বলেছিল সে কারণে।
﴿أَلَمْ يَعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ يَعْلَمُ سِرَّهُمْ وَنَجْوَاهُمْ وَأَنَّ اللَّهَ عَلَّامُ الْغُيُوبِ﴾
তারা কি জানে না যে, নিশ্চয় আল্লাহ্ তাদের অন্তরের গোপন কথা ও তাদের গোপন পরামর্শ জানেন এবং নিশ্চয় আল্লাহ্ গায়েবসমূহের ব্যাপারে সম্যক জ্ঞাত?
﴿الَّذِينَ يَلْمِزُونَ الْمُطَّوِّعِينَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ فِي الصَّدَقَاتِ وَالَّذِينَ لَا يَجِدُونَ إِلَّا جُهْدَهُمْ فَيَسْخَرُونَ مِنْهُمْ ۙ سَخِرَ اللَّهُ مِنْهُمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ﴾
মুমিনদের মধ্যে যারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সদকা দেয় এবং যারা নিজ শ্রম ছাড়া কিছুই পায় না, তাদেরকে যারা দোষারোপ করে [১]। অতঃপর তারা তাদের নিয়ে উপহাস করে, আল্লাহ্ তাদেরকে নিয়ে উপহাস করেন [২]; আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
﴿اسْتَغْفِرْ لَهُمْ أَوْ لَا تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ إِنْ تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ سَبْعِينَ مَرَّةً فَلَنْ يَغْفِرَ اللَّهُ لَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ كَفَرُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ ۗ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْفَاسِقِينَ﴾
আপনি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন অথবা তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা না করুন একই কথা; আপনি সত্তর বার তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করলেও আল্লাহ্ তাদেরকে কখনই ক্ষমা করবেন না। এটা এ জন্য যে, তারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের সাথে কুফরী করেছে। আর আল্লাহ্ ফাসেক সম্প্রদায়কে হিদায়াত দেন না [১]
﴿فَرِحَ الْمُخَلَّفُونَ بِمَقْعَدِهِمْ خِلَافَ رَسُولِ اللَّهِ وَكَرِهُوا أَنْ يُجَاهِدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَقَالُوا لَا تَنْفِرُوا فِي الْحَرِّ ۗ قُلْ نَارُ جَهَنَّمَ أَشَدُّ حَرًّا ۚ لَوْ كَانُوا يَفْقَهُونَ﴾
যারা পিছনে রয়ে গেল [১] তারা আল্লাহ্র রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ [২] করে বসে থাকতেই আনন্দ বোধ করল এবং তাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দ্বারা আল্লাহ্র পথে জিহাদ করা অপছন্দ করল এবং তারা বলল, ‘গরমের মধ্যে অভিযানে বের হয়ো না।‘ বলুন, ‘উত্তাপে জাহান্নামের আগুন প্রচন্ডতম [৩],’যদি তারা বুঝত!
﴿فَلْيَضْحَكُوا قَلِيلًا وَلْيَبْكُوا كَثِيرًا جَزَاءً بِمَا كَانُوا يَكْسِبُونَ﴾
কাজেই তারা অল্প কিছু হেসে নিক, তারা প্রচুর কাঁদবে [১] সেসব কাজের প্রতিফল হিসেবে যা কিছু তারা করেছে।
﴿فَإِنْ رَجَعَكَ اللَّهُ إِلَىٰ طَائِفَةٍ مِنْهُمْ فَاسْتَأْذَنُوكَ لِلْخُرُوجِ فَقُلْ لَنْ تَخْرُجُوا مَعِيَ أَبَدًا وَلَنْ تُقَاتِلُوا مَعِيَ عَدُوًّا ۖ إِنَّكُمْ رَضِيتُمْ بِالْقُعُودِ أَوَّلَ مَرَّةٍ فَاقْعُدُوا مَعَ الْخَالِفِينَ﴾
অতঃপর আল্লাহ্ যদি আপনাকে তাদের কোন দলের কাছে ফেরত আনেন এবং তারা অভিযানে বের হওয়ার জন্য আপনার অনুমতি প্রার্থনা করে, তখন আপনি বলবেন, ‘তোমরা তো আমার সাথে কখনো বের হবে না [১] এবং তোমরা আমার সঙ্গী হয়ে কখনো শত্রুর সাথে যুদ্ধ করবে না। তোমরা তো প্রথমবার বসে থাকাই পছন্দ করেছিলে; কাজেই যারা পিছনে থাকে তাদের সাথে বসেই থাক।’
﴿وَلَا تُصَلِّ عَلَىٰ أَحَدٍ مِنْهُمْ مَاتَ أَبَدًا وَلَا تَقُمْ عَلَىٰ قَبْرِهِ ۖ إِنَّهُمْ كَفَرُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَمَاتُوا وَهُمْ فَاسِقُونَ﴾
আর তাদের মধ্যে কারো মৃত্যু হলে আপনি কখনো তার জন্য জানাযার সালাত পড়বেন না এবং তার কবরের পাশে দাঁড়াবেন না [১]; তারা তো আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলকে অস্বীকার করেছিল এবং ফাসেক অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়েছে।
﴿وَلَا تُعْجِبْكَ أَمْوَالُهُمْ وَأَوْلَادُهُمْ ۚ إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ أَنْ يُعَذِّبَهُمْ بِهَا فِي الدُّنْيَا وَتَزْهَقَ أَنْفُسُهُمْ وَهُمْ كَافِرُونَ﴾
আর তাদের সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি আপনাকে যেন বিমুগ্ধ না করে; আল্লাহ্ তো এগুলোর দ্বারাই তাদেরকে পার্থিব জীবনে শাস্তি দিতে চান; আর তারা কাফের থাকা অবস্থায় তাদের আত্মা দেহ-ত্যাগ করে [১]
﴿وَإِذَا أُنْزِلَتْ سُورَةٌ أَنْ آمِنُوا بِاللَّهِ وَجَاهِدُوا مَعَ رَسُولِهِ اسْتَأْذَنَكَ أُولُو الطَّوْلِ مِنْهُمْ وَقَالُوا ذَرْنَا نَكُنْ مَعَ الْقَاعِدِينَ﴾
আর ‘আল্লাহ্ প্রতি ঈমান আন এবং রাসূলের সঙ্গী হয়ে জিহাদ কর’---এ মর্মে যখন কোন সূরা নাযিল হয় তখন তাদের মধ্যে যাদের শক্তিসামর্থ্য আছে তারা আপনার কাছে অব্যাহতি চায় এবং বলে, ‘আমাদেরকে রেহাই দিন, যারা বসে থাকে আমরা তাদের সাথেই থাকব।‘
﴿رَضُوا بِأَنْ يَكُونُوا مَعَ الْخَوَالِفِ وَطُبِعَ عَلَىٰ قُلُوبِهِمْ فَهُمْ لَا يَفْقَهُونَ﴾
তারা অন্তঃপুর বাসিনীদের সাথে অবস্থান করাই পছন্দ করেছে এবং তাদের অন্তরের উপর মোহর এঁটে দেয়া হলো; ফলে তারা বুঝতে পারে না।
﴿لَٰكِنِ الرَّسُولُ وَالَّذِينَ آمَنُوا مَعَهُ جَاهَدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ ۚ وَأُولَٰئِكَ لَهُمُ الْخَيْرَاتُ ۖ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ﴾
কিন্তু রাসূল এবং যারা তাঁরা সাথে ঈমান এনেছে তারা নিজ সম্পদ ও জীবন দ্বারা আল্লাহ্র পথে জিহাদ করেছে; আর তারা তাদের জন্যই রয়েছে যাবতীয় কল্যাণ এবং তারাই সফলকাম।
﴿أَعَدَّ اللَّهُ لَهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا ۚ ذَٰلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ﴾
আল্লাহ্ তাদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন জান্নাত, যারা নিচে নদী প্রবাহিত, যেখানে তারা স্থায়ী হবে; এটাই মহাসাফল্য।
﴿وَجَاءَ الْمُعَذِّرُونَ مِنَ الْأَعْرَابِ لِيُؤْذَنَ لَهُمْ وَقَعَدَ الَّذِينَ كَذَبُوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ ۚ سَيُصِيبُ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ﴾
আর মরুবাসীদের মধ্যে কিছু লোক অজুহাত পেশ করতে আসল যেন এদেরকে অব্যাহতি দেয়া হয় এবং যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের সাথে মিথ্যা বলেছিল, তারা বসে রইল, তাদের মধ্যে যারা কুফরী করেছে অচিরেই তারা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি পাবে [১]
﴿لَيْسَ عَلَى الضُّعَفَاءِ وَلَا عَلَى الْمَرْضَىٰ وَلَا عَلَى الَّذِينَ لَا يَجِدُونَ مَا يُنْفِقُونَ حَرَجٌ إِذَا نَصَحُوا لِلَّهِ وَرَسُولِهِ ۚ مَا عَلَى الْمُحْسِنِينَ مِنْ سَبِيلٍ ۚ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَحِيمٌ﴾
যারা দুর্বল, যারা পীড়িত এবং যারা অর্থ সাহায্যে অসমর্থ, তাদের কোন অপরাধ নেই, যদি আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের হিতাকাঙ্খী হয় [১]। মুহসিনদের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোন পথ নেই; আর আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
﴿وَلَا عَلَى الَّذِينَ إِذَا مَا أَتَوْكَ لِتَحْمِلَهُمْ قُلْتَ لَا أَجِدُ مَا أَحْمِلُكُمْ عَلَيْهِ تَوَلَّوْا وَأَعْيُنُهُمْ تَفِيضُ مِنَ الدَّمْعِ حَزَنًا أَلَّا يَجِدُوا مَا يُنْفِقُونَ﴾
আর তাদেরও কোন অপরাধ নেই যারা আপনার কাছে বাহনের জন্য আসলে আপনি বলেছিলেন, ‘তোমাদের জন্য কোন বাহন আমি পাচ্ছি না’; তারা অশ্রুবিগলিত চোখে ফিরে গেল, কারণ তারা খরচ করার মত কিছুই পায়নি [১]
﴿۞ إِنَّمَا السَّبِيلُ عَلَى الَّذِينَ يَسْتَأْذِنُونَكَ وَهُمْ أَغْنِيَاءُ ۚ رَضُوا بِأَنْ يَكُونُوا مَعَ الْخَوَالِفِ وَطَبَعَ اللَّهُ عَلَىٰ قُلُوبِهِمْ فَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ﴾
যারা অভাবমুক্ত হয়েও অব্যাহতি প্রার্থনা করেছে, অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের কারণ আছে। তারা অন্তঃপুরবাসিনীদের সাথে থাকাই পছন্দ করেছিল; আর আল্লাহ্ তাদের অন্তরের উপর মোহর এঁটে দিয়েছেন, ফলে তারা জানতে পারে না।
﴿يَعْتَذِرُونَ إِلَيْكُمْ إِذَا رَجَعْتُمْ إِلَيْهِمْ ۚ قُلْ لَا تَعْتَذِرُوا لَنْ نُؤْمِنَ لَكُمْ قَدْ نَبَّأَنَا اللَّهُ مِنْ أَخْبَارِكُمْ ۚ وَسَيَرَى اللَّهُ عَمَلَكُمْ وَرَسُولُهُ ثُمَّ تُرَدُّونَ إِلَىٰ عَالِمِ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ فَيُنَبِّئُكُمْ بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ﴾
তোমরা তাদের কাছে ফিরে আসলে তারা তোমাদের কাছে অজুহাত পেশ করবে [১]। বলুন, ‘তোমরা অজুহাত পেশ করো না, আমরা তোমাদেরকে কখনো বিশ্বাস করব না; অবশ্যই আল্লাহ্ আমাদেরকে তোমাদের খবর জানিয়ে দিয়েছেন এবং আল্লাহ্ অবশ্যই তোমাদের কাজকর্ম দেখবেন এবং তাঁর রাসূলও। তারপর গায়েব ও প্রকাশ্যের জ্ঞানীর কাছে তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে অতঃপর তোমরা যা করতে, তা তিনি তোমাদেরকে জানিয়ে দেবেন [২]।‘
﴿سَيَحْلِفُونَ بِاللَّهِ لَكُمْ إِذَا انْقَلَبْتُمْ إِلَيْهِمْ لِتُعْرِضُوا عَنْهُمْ ۖ فَأَعْرِضُوا عَنْهُمْ ۖ إِنَّهُمْ رِجْسٌ ۖ وَمَأْوَاهُمْ جَهَنَّمُ جَزَاءً بِمَا كَانُوا يَكْسِبُونَ﴾
তোমরা তাদের কাছে ফিরে আসলে অচিরেই তারা তোমাদের কাছে আল্লাহ্র শপথ করবে যাতে তোমরা তাদের উপেক্ষা কর [১]। কাজেই তোমরা তাদেরকে উপেক্ষা কর; নিশ্চয় তারা অপবিত্র এবং তাদের কৃতকর্মের ফলস্বরূপ জাহান্নামই তাদের আবাসস্থল।
﴿يَحْلِفُونَ لَكُمْ لِتَرْضَوْا عَنْهُمْ ۖ فَإِنْ تَرْضَوْا عَنْهُمْ فَإِنَّ اللَّهَ لَا يَرْضَىٰ عَنِ الْقَوْمِ الْفَاسِقِينَ﴾
তারা তোমাদের কাছে শপথ করবে যাতে তোমরা তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হও। অতঃপর তোমরা তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হলেও আল্লাহ্ তো ফাসিক সম্প্রদায়ের প্রতি সন্তুষ্ট হবেন না [১]।
﴿الْأَعْرَابُ أَشَدُّ كُفْرًا وَنِفَاقًا وَأَجْدَرُ أَلَّا يَعْلَمُوا حُدُودَ مَا أَنْزَلَ اللَّهُ عَلَىٰ رَسُولِهِ ۗ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ﴾
আ’রব [১] বা মরুবাসীরা কুফরী ও মুনাফেকীতে শক্ত; এবং আল্লাহ্ তাঁর রাসূলের উপর যা নাযিল করেছেন, তার সীমারেখা সম্পর্কে অজ্ঞ থাকার অধিক উপযোগী [২]। আর আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
﴿وَمِنَ الْأَعْرَابِ مَنْ يَتَّخِذُ مَا يُنْفِقُ مَغْرَمًا وَيَتَرَبَّصُ بِكُمُ الدَّوَائِرَ ۚ عَلَيْهِمْ دَائِرَةُ السَّوْءِ ۗ وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ﴾
আর মরুবাসীদের কেউ কেউ, যা তারা আল্লাহ্র পথে ব্যয় করে তা জরিমানা গণ্য করে এবং তোমাদের বিপর্যয়ের প্রতীক্ষা করে। তাদের উপরই হোক নিকৃষ্টতম বিপর্যয় [১]। আর আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
﴿وَمِنَ الْأَعْرَابِ مَنْ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَيَتَّخِذُ مَا يُنْفِقُ قُرُبَاتٍ عِنْدَ اللَّهِ وَصَلَوَاتِ الرَّسُولِ ۚ أَلَا إِنَّهَا قُرْبَةٌ لَهُمْ ۚ سَيُدْخِلُهُمُ اللَّهُ فِي رَحْمَتِهِ ۗ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ﴾
আর মরুবাসীদের কেউ কেউ আল্লাহ্ ও শেষ দিনের উপর ঈমান রাখে এবং যা ব্যয় করে তাকে আল্লাহ্র সান্নিধ্য ও রাসূলের দো’আ লাভের উপায় গণ্য করে। জেনে রাখ, নিশ্চয় তা তাদের জন্য আল্লাহ্র সান্নিধ্য লাভের উপায়; অচিরেই আল্লাহ্ তাদেরকে নিজ রহমতে দাখিল করবেন [১] নিশ্চয় আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু [২]।
﴿وَالسَّابِقُونَ الْأَوَّلُونَ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ وَالْأَنْصَارِ وَالَّذِينَ اتَّبَعُوهُمْ بِإِحْسَانٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ وَأَعَدَّ لَهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي تَحْتَهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا ۚ ذَٰلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ﴾
আর মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে যারা প্রথম অগ্রগামী [১] এবং যারা ইহসানের সাথে তাদের অনুসরণ করে [২] আল্লাহ্ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও তাঁর উপর সন্তুষ্ট হয়েছেন [৩]। আর তিনি তাদের জন্য তৈরী করেছেন জান্নাত, যার নিচে নদী প্রবাহিত, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে। এ তো মহাসাফল্য।
﴿وَمِمَّنْ حَوْلَكُمْ مِنَ الْأَعْرَابِ مُنَافِقُونَ ۖ وَمِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ ۖ مَرَدُوا عَلَى النِّفَاقِ لَا تَعْلَمُهُمْ ۖ نَحْنُ نَعْلَمُهُمْ ۚ سَنُعَذِّبُهُمْ مَرَّتَيْنِ ثُمَّ يُرَدُّونَ إِلَىٰ عَذَابٍ عَظِيمٍ﴾
আর মরুবাসীদের মধ্যে যারা তোমাদের আশপাশে আছে তাদের কেউ কেউ মুনাফেক এবং মদীনাবাসীদের মধ্যেও কেউ কেউ, তারা মুনাফেকীতে চরমে পৌছে গেছে। আপনি তাদেরকে জানেন না [১]; আমরা তাদেরকে জানি। অচিরেই আমরা তাদেরকে দু’বার শাস্তি দেব তারপর তাদেরকে মহাশাস্তির দিকে প্রত্যাবর্তন করানো হবে।
﴿وَآخَرُونَ اعْتَرَفُوا بِذُنُوبِهِمْ خَلَطُوا عَمَلًا صَالِحًا وَآخَرَ سَيِّئًا عَسَى اللَّهُ أَنْ يَتُوبَ عَلَيْهِمْ ۚ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ﴾
আর অপর কিছু লোক আছে নিজেদের অপরাধ স্বীকার করেছে, তারা এক সৎকাজের সাথে অন্য অসৎকাজ মিশিয়ে ফেলেছে; আল্লাহ্ হয়ত তাদেরকে ক্ষমা করবেন [১]; নিশ্চয় আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
﴿خُذْ مِنْ أَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَتُزَكِّيهِمْ بِهَا وَصَلِّ عَلَيْهِمْ ۖ إِنَّ صَلَاتَكَ سَكَنٌ لَهُمْ ۗ وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ﴾
আপনি তাদের সম্পদ থেকে ‘সদকা’ গ্রহন করুন [১]। এর দ্বারা আপনি তাদেরকে পবিত্র করবেন এবং পরিশোধিত করবেন। আর আপনি তেদের জন্য দো’আ করুন। আপনার দো’আ তো তোদের জন্য প্রশান্তি কর [২]। আর আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
﴿أَلَمْ يَعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ هُوَ يَقْبَلُ التَّوْبَةَ عَنْ عِبَادِهِ وَيَأْخُذُ الصَّدَقَاتِ وَأَنَّ اللَّهَ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ﴾
তারা কি জানে না যে, নিশ্চয় আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের তাওবাহ্ কবুল করেন এবং ‘সদকা’ গ্রহণ করেন [১], আর নিশ্চয় আল্লাহ্ তাওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু?
﴿وَقُلِ اعْمَلُوا فَسَيَرَى اللَّهُ عَمَلَكُمْ وَرَسُولُهُ وَالْمُؤْمِنُونَ ۖ وَسَتُرَدُّونَ إِلَىٰ عَالِمِ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ فَيُنَبِّئُكُمْ بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ﴾
আর বলুন, ‘তোমরা কাজ করতে থাক; আল্লাহ্ তো তোমাদের কাজকর্ম দেখবেন এবং তাঁর রাসূল ও মুমিনগণও। আর অচিরেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে গায়েব ও প্রকাশ্যের জ্ঞানীর নিকট, অতঃপর তিনি তোমরা যা করতে তা তোমাদেরকে জানিয়ে দেবেন।‘
﴿وَآخَرُونَ مُرْجَوْنَ لِأَمْرِ اللَّهِ إِمَّا يُعَذِّبُهُمْ وَإِمَّا يَتُوبُ عَلَيْهِمْ ۗ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ﴾
আর আল্লাহর আদেশের প্রতীক্ষায় অপর কিছু সংখ্যক সম্পর্কে সিদ্ধান্ত পিছিয়ে দেয়া হল--- তিনি তাদেরকে শাস্তি দেবেন, না ক্ষমা করবেন [১]। আর আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
﴿وَالَّذِينَ اتَّخَذُوا مَسْجِدًا ضِرَارًا وَكُفْرًا وَتَفْرِيقًا بَيْنَ الْمُؤْمِنِينَ وَإِرْصَادًا لِمَنْ حَارَبَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ مِنْ قَبْلُ ۚ وَلَيَحْلِفُنَّ إِنْ أَرَدْنَا إِلَّا الْحُسْنَىٰ ۖ وَاللَّهُ يَشْهَدُ إِنَّهُمْ لَكَاذِبُونَ﴾
আর যারা মসজিদ নির্মাণ করেছে ক্ষতিসাধন [১], কুফরী ও মুমিনদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে। এবং এর আগে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে গোপন ঘাটিস্বরূপ ব্যবহারের উদ্দেশ্যে [২], আর তারা অবশই শপথ করবে, ‘ আমরা কেবল ভালো চেয়েছি;’ আর আল্লাহ্ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, অবশ্যই তারা মিথ্যাবাদী।
﴿لَا تَقُمْ فِيهِ أَبَدًا ۚ لَمَسْجِدٌ أُسِّسَ عَلَى التَّقْوَىٰ مِنْ أَوَّلِ يَوْمٍ أَحَقُّ أَنْ تَقُومَ فِيهِ ۚ فِيهِ رِجَالٌ يُحِبُّونَ أَنْ يَتَطَهَّرُوا ۚ وَاللَّهُ يُحِبُّ الْمُطَّهِّرِينَ﴾
আপনি তাতে কখনো সালাতের জন্য দাঁড়াবেন না [১]; যে মসজিদের ভিত্তি প্রথম দিন থেকেই স্থাপিত হয়েছে তাক্ওয়ার উপর [২], তাই আপনার সালাতের জন্য দাঁড়ানোর বেশী হকদার। সেখানে এমন লোক আছে যারা উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন ভালবাসে , আর পবিত্রতা অর্জনকারীদেরকে আল্লাহ্ পছন্দ করেন [৩]।
﴿أَفَمَنْ أَسَّسَ بُنْيَانَهُ عَلَىٰ تَقْوَىٰ مِنَ اللَّهِ وَرِضْوَانٍ خَيْرٌ أَمْ مَنْ أَسَّسَ بُنْيَانَهُ عَلَىٰ شَفَا جُرُفٍ هَارٍ فَانْهَارَ بِهِ فِي نَارِ جَهَنَّمَ ۗ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ﴾
যে ব্যাক্তি তার ঘরের ভিত্তি আল্লাহ্র তাকওয়া ও সন্তুষ্টির উপর স্থাপন করে সে উত্তম, না ঐ ব্যাক্তি উত্তম যে তার ঘরের ভিত্তি স্থাপন করে এক খাদের ধ্বংসোন্মুখ কিনারে, ফলে যা তাকেসহ জাহান্নামের আগুনে গিয়ে পড়ে? আর আল্লাহ্ যালিম সম্প্রদায়কে হেদায়াত দেন না।
﴿لَا يَزَالُ بُنْيَانُهُمُ الَّذِي بَنَوْا رِيبَةً فِي قُلُوبِهِمْ إِلَّا أَنْ تَقَطَّعَ قُلُوبُهُمْ ۗ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ﴾
তাদের ঘর যা তারা নির্মাণ করেছে তা তাদের অন্তরে সন্দেহের কারণ হয়ে থাকবে- যে পর্যন্ত না তাদের অন্তর ছিন্ন-বিছিন্ন হয়ে যায়। আর আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
﴿۞ إِنَّ اللَّهَ اشْتَرَىٰ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ أَنْفُسَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ بِأَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ ۚ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَيَقْتُلُونَ وَيُقْتَلُونَ ۖ وَعْدًا عَلَيْهِ حَقًّا فِي التَّوْرَاةِ وَالْإِنْجِيلِ وَالْقُرْآنِ ۚ وَمَنْ أَوْفَىٰ بِعَهْدِهِ مِنَ اللَّهِ ۚ فَاسْتَبْشِرُوا بِبَيْعِكُمُ الَّذِي بَايَعْتُمْ بِهِ ۚ وَذَٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ﴾
নিশ্চয় আল্লাহ্ মুমিনদের কাছ থেকে তাদের জীবন ও সম্পদ কিনে নিয়েছেন (এর বিনিময়ে) যে, তাদের জন্য আছে জান্নাত। তারা আল্লাহ্র পথে যুদ্ধ করে, অতঃপর তারা মারে ও মরে। তাওরাত, ইনজীল ও কুরআনে এ সম্পর্কে তাদের হক ওয়াদা রয়েছে। আর নিজ প্রতিজ্ঞা পালনে আল্লাহর চেয়ে শ্রেষ্ঠতর কে আছে? সুতরাং তোমরা যে সওদা করেছ সে সওদার জন্য আনন্দিত হও। আর সেটাই তো মহাসাফল্য [১]
﴿التَّائِبُونَ الْعَابِدُونَ الْحَامِدُونَ السَّائِحُونَ الرَّاكِعُونَ السَّاجِدُونَ الْآمِرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَالنَّاهُونَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَالْحَافِظُونَ لِحُدُودِ اللَّهِ ۗ وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِينَ﴾
তারা [১] তাওবাহকারী, ‘ইবাদাতকারী, আল্লাহ্র প্রশংসাকারী, সিয়াম পালনকারী [২] , রুকূ’কারী, সিজদাকারী, সৎকাজের আদেশদাতা, অসৎকাজের নিষেধকারী এবং আল্লাহ্র নির্ধারিত সীমারেখা সংরক্ষণকারী [৩]; আর আপনি মুমিনদেরকে শুভ সংবাদ দিন।
﴿مَا كَانَ لِلنَّبِيِّ وَالَّذِينَ آمَنُوا أَنْ يَسْتَغْفِرُوا لِلْمُشْرِكِينَ وَلَوْ كَانُوا أُولِي قُرْبَىٰ مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمْ أَنَّهُمْ أَصْحَابُ الْجَحِيمِ﴾
আত্মীয়-স্বজন হলেও মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা নবী ও যারা ঈমান এনেছে তাদের জন্য সংগত নয় যখন এটা সুস্পষ্ট হয়ে গেছে যে, নিশ্চিতই তারা প্রজ্বলিত আগুনের অধিবাসী [১]।
﴿وَمَا كَانَ اسْتِغْفَارُ إِبْرَاهِيمَ لِأَبِيهِ إِلَّا عَنْ مَوْعِدَةٍ وَعَدَهَا إِيَّاهُ فَلَمَّا تَبَيَّنَ لَهُ أَنَّهُ عَدُوٌّ لِلَّهِ تَبَرَّأَ مِنْهُ ۚ إِنَّ إِبْرَاهِيمَ لَأَوَّاهٌ حَلِيمٌ﴾
আর ইবরাহীম তাঁর পিতার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছিল, তাকে এর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বলে; তারপর যখন এটা তার কাছে সুস্পষ্ট হল যে, সে আল্লাহ্র শত্রু তখন ইবরাহীম তার সম্পর্ক ছিন্ন করলেন। ইবরাহীম তো কোমল হৃদয় [১] ও সহনশীল।
﴿وَمَا كَانَ اللَّهُ لِيُضِلَّ قَوْمًا بَعْدَ إِذْ هَدَاهُمْ حَتَّىٰ يُبَيِّنَ لَهُمْ مَا يَتَّقُونَ ۚ إِنَّ اللَّهَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ﴾
আর আল্লাহ্ এমন নন যে, তিনি কোন সম্প্রদায়কে হিদায়াত দানে পর তাদেরকে বিভ্রান্ত করবেন--- যতক্ষণ না তাদের জন্য সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করবেন, যে তারা তাক্ওয়া অবলম্বন করবে তা; নিশ্চয় আল্লাহ্ সবকিছু সম্পর্কে সর্বজ্ঞ।
﴿إِنَّ اللَّهَ لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۖ يُحْيِي وَيُمِيتُ ۚ وَمَا لَكُمْ مِنْ دُونِ اللَّهِ مِنْ وَلِيٍّ وَلَا نَصِيرٍ﴾
নিশ্চয় আল্লাহ্, আসমান ও যমীনের মালিকানা তাঁরই; তিনি জীবন দান করেন এবং তিনি মৃত্যু ঘটান। আর আল্লাহ্ ছাড়া তোমাদের কোন অভিভাবক নেই, সাহায্যকারীও নেই।
﴿لَقَدْ تَابَ اللَّهُ عَلَى النَّبِيِّ وَالْمُهَاجِرِينَ وَالْأَنْصَارِ الَّذِينَ اتَّبَعُوهُ فِي سَاعَةِ الْعُسْرَةِ مِنْ بَعْدِ مَا كَادَ يَزِيغُ قُلُوبُ فَرِيقٍ مِنْهُمْ ثُمَّ تَابَ عَلَيْهِمْ ۚ إِنَّهُ بِهِمْ رَءُوفٌ رَحِيمٌ﴾
আল্লাহ্ অবশ্যই নবী, মুহাজির ও আনসারদের তাওবা কবুল করলেন, যারা তার অনুসরণ করেছিল সংকটময় মুহূর্তে [১]- তাদের এক দলের হৃদয় সত্যচুত হওয়ার উপক্রম হবার পর। তারপর আল্লাহ্ তাদের তাওবা কবুল করলেন; নিশ্চয় তিনি তাদের প্রতি অতি স্নেহশীল, পরম দয়ালু।
﴿وَعَلَى الثَّلَاثَةِ الَّذِينَ خُلِّفُوا حَتَّىٰ إِذَا ضَاقَتْ عَلَيْهِمُ الْأَرْضُ بِمَا رَحُبَتْ وَضَاقَتْ عَلَيْهِمْ أَنْفُسُهُمْ وَظَنُّوا أَنْ لَا مَلْجَأَ مِنَ اللَّهِ إِلَّا إِلَيْهِ ثُمَّ تَابَ عَلَيْهِمْ لِيَتُوبُوا ۚ إِنَّ اللَّهَ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ﴾
আর তিনি তাওবা কবুল করলেন অন্য তিনজনেরও [১], যাদের সম্পর্কে সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হয়েছিল, যে পর্যন্ত না যমীন বিস্তৃত হওয়া সত্ত্বেও তাদের জন্য সেটা সংকুচিত হয়েছিল এবং তাদের জীবন তাদের জন্য দুর্বিষহ হয়েছিল আর তারা নিশ্চিত উপলব্ধি করেছিল যে, আল্লাহর পাকড়াও থেকে বাঁচার জন্য তিনি ছাড়া আর কোন আশ্রয়স্থল নেই। তারপর তিনি তাদের তাওবাহ্ কবুল করলেন যাতে তারা তাওবায় স্থির থাকে। নিশ্চয় আল্লাহ্ অধিক তাওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু।
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَكُونُوا مَعَ الصَّادِقِينَ﴾
হে ইমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ্র তাকওয়া অবলম্বন কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক [১]।
﴿مَا كَانَ لِأَهْلِ الْمَدِينَةِ وَمَنْ حَوْلَهُمْ مِنَ الْأَعْرَابِ أَنْ يَتَخَلَّفُوا عَنْ رَسُولِ اللَّهِ وَلَا يَرْغَبُوا بِأَنْفُسِهِمْ عَنْ نَفْسِهِ ۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ لَا يُصِيبُهُمْ ظَمَأٌ وَلَا نَصَبٌ وَلَا مَخْمَصَةٌ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلَا يَطَئُونَ مَوْطِئًا يَغِيظُ الْكُفَّارَ وَلَا يَنَالُونَ مِنْ عَدُوٍّ نَيْلًا إِلَّا كُتِبَ لَهُمْ بِهِ عَمَلٌ صَالِحٌ ۚ إِنَّ اللَّهَ لَا يُضِيعُ أَجْرَ الْمُحْسِنِينَ﴾
মদীনাবাসী ও তাদের পার্শ্ববর্তী মরুবাসীদের জন্য সংগত নয় যে তারা আল্লাহ্র রাসূলের সহগামী না হয়ে পিছনে রয়ে যাবে এবং তার জীবনের চেয়ে নিজেদের জীবনকে প্রিয় মনে করবে; কারণ আল্লাহর পথে তাদেরকে যে তৃষ্ণা, ক্লান্তি ও ক্ষুদা পেয়ে বসে এবং কাফেরদের ক্রোধ উদ্রেক করে তাদের প্রতিটি পদক্ষেপ আর শত্রুদেরকে কোন কষ্ট প্রদান করে [১], তা তাদের জন্য সৎকাজরূপে লিপিবদ্ধ করা হয়। নিশ্চয় আল্লাহ্ মুহসিনদের কাজের প্রতিফল নষ্ট করেন না।
﴿وَلَا يُنْفِقُونَ نَفَقَةً صَغِيرَةً وَلَا كَبِيرَةً وَلَا يَقْطَعُونَ وَادِيًا إِلَّا كُتِبَ لَهُمْ لِيَجْزِيَهُمُ اللَّهُ أَحْسَنَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ﴾
আর তারা ছোট বা বড় যা কিছুই ব্যয় করে এবং যে কোন প্রান্তরই অতিক্রম করে তা তাদের অনুকূলে লিপিবদ্ধ হয়--- যাতে তারা যা করে আল্লাহ্ তার উৎকৃষ্টতর পুরস্কার তাদেরকে দিতে পারেন।
﴿۞ وَمَا كَانَ الْمُؤْمِنُونَ لِيَنْفِرُوا كَافَّةً ۚ فَلَوْلَا نَفَرَ مِنْ كُلِّ فِرْقَةٍ مِنْهُمْ طَائِفَةٌ لِيَتَفَقَّهُوا فِي الدِّينِ وَلِيُنْذِرُوا قَوْمَهُمْ إِذَا رَجَعُوا إِلَيْهِمْ لَعَلَّهُمْ يَحْذَرُونَ﴾
আর মুমিনদের সকলের একসাথে অভিযানে বের হওয়া সংগত ন্য। অতঃপর তাদের প্রত্যেক দলের এক অংশ কেন বের হয় না, যাতে তারা দ্বীনের গভীর জ্ঞান অর্জন [১] করতে পারে [২] এবং তাদের সম্প্রদায়কে ভিতিপ্রদর্শন করতে পারে, যখন তারা তাদের কাছে ফিরে আসবে [৩], যাতে তারা সতর্ক হয়।
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا قَاتِلُوا الَّذِينَ يَلُونَكُمْ مِنَ الْكُفَّارِ وَلْيَجِدُوا فِيكُمْ غِلْظَةً ۚ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ مَعَ الْمُتَّقِينَ﴾
হে ঈমানদারগণ ! কাফেরদের মধ্যে যারা তোমাদের কাছাকাছি তাদের সাথে যুদ্ধ কর [১] এবং তারা যেন তোমাদের মধ্যে কঠোরতা [২] দেখতে পায়। আর জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহ্ মুত্তাকীদের সাথে আছেন।
﴿وَإِذَا مَا أُنْزِلَتْ سُورَةٌ فَمِنْهُمْ مَنْ يَقُولُ أَيُّكُمْ زَادَتْهُ هَٰذِهِ إِيمَانًا ۚ فَأَمَّا الَّذِينَ آمَنُوا فَزَادَتْهُمْ إِيمَانًا وَهُمْ يَسْتَبْشِرُونَ﴾
আর যখনই কোন সূরা নাযিল হয়। তখন তাদের কেউ কেউ বলে, ‘এটা তোমাদের মধ্যে কার ঈমান বৃদ্ধি করল [১]? অতঃপর যারা মুমিন এটা তাদেরই ঈমান বৃদ্ধি করে এবং তারাই আনন্দিত হয়।
﴿وَأَمَّا الَّذِينَ فِي قُلُوبِهِمْ مَرَضٌ فَزَادَتْهُمْ رِجْسًا إِلَىٰ رِجْسِهِمْ وَمَاتُوا وَهُمْ كَافِرُونَ﴾
আর যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে, এটা তাদের কলুষের সাথে আরো কলুষ যুক্ত করে। আর তাদের মৃত্যু ঘটে কাফের অবস্থায়।
﴿أَوَلَا يَرَوْنَ أَنَّهُمْ يُفْتَنُونَ فِي كُلِّ عَامٍ مَرَّةً أَوْ مَرَّتَيْنِ ثُمَّ لَا يَتُوبُونَ وَلَا هُمْ يَذَّكَّرُونَ﴾
তারা কি দেখে না যে, ‘তাদেরকে প্রতিবছর একবার বা দু’বার বিপর্যস্ত করা হয় [১]?’ এর পরও তারা তাওবাহ্ করে না এবং উপদেশ গ্রহন করে না।
﴿وَإِذَا مَا أُنْزِلَتْ سُورَةٌ نَظَرَ بَعْضُهُمْ إِلَىٰ بَعْضٍ هَلْ يَرَاكُمْ مِنْ أَحَدٍ ثُمَّ انْصَرَفُوا ۚ صَرَفَ اللَّهُ قُلُوبَهُمْ بِأَنَّهُمْ قَوْمٌ لَا يَفْقَهُونَ﴾
আর যখনই কোন সূরা নাযিল হয়, তখন তারা একে অপরের দিকে তাকায় এবং জিজ্ঞেস করে, ‘তোমাদেরকে কেউ লক্ষ্য করছে কি?’ তারপর তারা সরে পড়ে। আল্লাহ্ তাদের হৃদয়কে সত্যবিমুখ করে দেন; কারণ তারা এমন এক সম্প্রদায় যারা ভালভাবে বোঝে না।
﴿لَقَدْ جَاءَكُمْ رَسُولٌ مِنْ أَنْفُسِكُمْ عَزِيزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيصٌ عَلَيْكُمْ بِالْمُؤْمِنِينَ رَءُوفٌ رَحِيمٌ﴾
অবশ্যই তোমাদের নিকট তোমাদের মধ্য হতেই একজন রাসূল এসেছেন, তোমাদের যে দুঃখ-কষ্ট হয়ে থাকে তা তার জন্য বড়ই বেদনাদায়ক। তিনি তোমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনদের প্রতি তিনি করুণাশীল ও অতি দয়ালু [১]।
﴿فَإِنْ تَوَلَّوْا فَقُلْ حَسْبِيَ اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ۖ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ ۖ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ﴾
অতঃপর তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে আপনি বলুন, ‘আমার জন্য আল্লাহ্ই যথেষ্ট, তিনি ছাড়া কোন সত্য ইলাহ্ নেই [১]। আমি তাঁরই উপর নির্ভর করি এবং তিনি মহা’আরশের [২] রব।‘
الترجمات والتفاسير لهذه السورة:
- سورة التوبة : الترجمة الأمهرية አማርኛ - الأمهرية
- سورة التوبة : اللغة العربية - المختصر في تفسير القرآن الكريم العربية - العربية
- سورة التوبة : اللغة العربية - التفسير الميسر العربية - العربية
- سورة التوبة : اللغة العربية - معاني الكلمات العربية - العربية
- سورة التوبة : الترجمة الأسامية অসমীয়া - الأسامية
- سورة التوبة : الترجمة الأذرية Azərbaycanca / آذربايجان - الأذرية
- سورة التوبة : الترجمة البنغالية বাংলা - البنغالية
- سورة التوبة : الترجمة البوسنية للمختصر في تفسير القرآن الكريم Bosanski - البوسنية
- سورة التوبة : الترجمة البوسنية - كوركت Bosanski - البوسنية
- سورة التوبة : الترجمة البوسنية - ميهانوفيتش Bosanski - البوسنية
- سورة التوبة : الترجمة الألمانية - بوبنهايم Deutsch - الألمانية
- سورة التوبة : الترجمة الألمانية - أبو رضا Deutsch - الألمانية
- سورة التوبة : الترجمة الإنجليزية - صحيح انترناشونال English - الإنجليزية
- سورة التوبة : الترجمة الإنجليزية - هلالي-خان English - الإنجليزية
- سورة التوبة : الترجمة الإسبانية Español - الإسبانية
- سورة التوبة : الترجمة الإسبانية - المنتدى الإسلامي Español - الإسبانية
- سورة التوبة : الترجمة الإسبانية (أمريكا اللاتينية) - المنتدى الإسلامي Español - الإسبانية
- سورة التوبة : الترجمة الفارسية للمختصر في تفسير القرآن الكريم فارسی - الفارسية
- سورة التوبة : الترجمة الفارسية - دار الإسلام فارسی - الفارسية
- سورة التوبة : الترجمة الفارسية - حسين تاجي فارسی - الفارسية
- سورة التوبة : الترجمة الفرنسية - المنتدى الإسلامي Français - الفرنسية
- سورة التوبة : الترجمة الفرنسية للمختصر في تفسير القرآن الكريم Français - الفرنسية
- سورة التوبة : الترجمة الغوجراتية ગુજરાતી - الغوجراتية
- سورة التوبة : الترجمة الهوساوية هَوُسَ - الهوساوية
- سورة التوبة : الترجمة الهندية हिन्दी - الهندية
- سورة التوبة : الترجمة الإندونيسية للمختصر في تفسير القرآن الكريم Bahasa Indonesia - الأندونيسية
- سورة التوبة : الترجمة الإندونيسية - شركة سابق Bahasa Indonesia - الأندونيسية
- سورة التوبة : الترجمة الإندونيسية - المجمع Bahasa Indonesia - الأندونيسية
- سورة التوبة : الترجمة الإندونيسية - وزارة الشؤون الإسلامية Bahasa Indonesia - الأندونيسية
- سورة التوبة : الترجمة الإيطالية للمختصر في تفسير القرآن الكريم Italiano - الإيطالية
- سورة التوبة : الترجمة الإيطالية Italiano - الإيطالية
- سورة التوبة : الترجمة اليابانية 日本語 - اليابانية
- سورة التوبة : الترجمة الكازاخية - مجمع الملك فهد Қазақша - الكازاخية
- سورة التوبة : الترجمة الكازاخية - جمعية خليفة ألطاي Қазақша - الكازاخية
- سورة التوبة : الترجمة الخميرية ភាសាខ្មែរ - الخميرية
- سورة التوبة : الترجمة الكورية 한국어 - الكورية
- سورة التوبة : الترجمة الكردية Kurdî / كوردی - الكردية
- سورة التوبة : الترجمة المليبارية മലയാളം - المليبارية
- سورة التوبة : الترجمة الماراتية मराठी - الماراتية
- سورة التوبة : الترجمة النيبالية नेपाली - النيبالية
- سورة التوبة : الترجمة الأورومية Oromoo - الأورومية
- سورة التوبة : الترجمة البشتوية پښتو - البشتوية
- سورة التوبة : الترجمة البرتغالية Português - البرتغالية
- سورة التوبة : الترجمة السنهالية සිංහල - السنهالية
- سورة التوبة : الترجمة الصومالية Soomaaliga - الصومالية
- سورة التوبة : الترجمة الألبانية Shqip - الألبانية
- سورة التوبة : الترجمة التاميلية தமிழ் - التاميلية
- سورة التوبة : الترجمة التلجوية తెలుగు - التلجوية
- سورة التوبة : الترجمة الطاجيكية - عارفي Тоҷикӣ - الطاجيكية
- سورة التوبة : الترجمة الطاجيكية Тоҷикӣ - الطاجيكية
- سورة التوبة : الترجمة التايلاندية ไทย / Phasa Thai - التايلاندية
- سورة التوبة : الترجمة الفلبينية (تجالوج) للمختصر في تفسير القرآن الكريم Tagalog - الفلبينية (تجالوج)
- سورة التوبة : الترجمة الفلبينية (تجالوج) Tagalog - الفلبينية (تجالوج)
- سورة التوبة : الترجمة التركية للمختصر في تفسير القرآن الكريم Türkçe - التركية
- سورة التوبة : الترجمة التركية - مركز رواد الترجمة Türkçe - التركية
- سورة التوبة : الترجمة التركية - شعبان بريتش Türkçe - التركية
- سورة التوبة : الترجمة التركية - مجمع الملك فهد Türkçe - التركية
- سورة التوبة : الترجمة الأويغورية Uyƣurqə / ئۇيغۇرچە - الأويغورية
- سورة التوبة : الترجمة الأوكرانية Українська - الأوكرانية
- سورة التوبة : الترجمة الأردية اردو - الأردية
- سورة التوبة : الترجمة الأوزبكية - علاء الدين منصور Ўзбек - الأوزبكية
- سورة التوبة : الترجمة الأوزبكية - محمد صادق Ўзбек - الأوزبكية
- سورة التوبة : الترجمة الفيتنامية للمختصر في تفسير القرآن الكريم Vèneto - الفيتنامية
- سورة التوبة : الترجمة الفيتنامية Vèneto - الفيتنامية
- سورة التوبة : الترجمة اليورباوية Yorùbá - اليوروبا
- سورة التوبة : الترجمة الصينية 中文 - الصينية