الترجمة البنغالية
ترجمة معاني القرآن الكريم للغة البنغالية ترجمها د. أبو بكر محمد زكريا، نشرها مجمع الملك فهد لطباعة المصحف الشريف بالمدينة المنورة. عام الطبعة 1436هـ.﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ﴾
অবশ্যই সফলকাম হয়েছে [১] মুমিনগণ,
﴿الَّذِينَ هُمْ فِي صَلَاتِهِمْ خَاشِعُونَ﴾
যারা তাদের সালাতে ভীতি-অবনত [১],
﴿وَالَّذِينَ هُمْ عَنِ اللَّغْوِ مُعْرِضُونَ﴾
আর যারা অসার কর্মকাণ্ড থেকে থাকে বিমুখ [১],
﴿وَالَّذِينَ هُمْ لِلزَّكَاةِ فَاعِلُونَ﴾
এবং যারা যাকাতে সক্রিয় [১],
﴿وَالَّذِينَ هُمْ لِفُرُوجِهِمْ حَافِظُونَ﴾
আর যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে রাখে সংরক্ষিত [১],
﴿إِلَّا عَلَىٰ أَزْوَاجِهِمْ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُمْ فَإِنَّهُمْ غَيْرُ مَلُومِينَ﴾
নিজেদের স্ত্রী বা অধিকারভুক্ত দাসীগণ ছাড়া, এতে তারা হবে না নিন্দিত [১],
﴿فَمَنِ ابْتَغَىٰ وَرَاءَ ذَٰلِكَ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْعَادُونَ﴾
অতঃপর কেউ এদেরকে ছাড়া অন্যকে কামনা করলে, তারাই হবে সীমালংঘনকারী [১],
﴿وَالَّذِينَ هُمْ لِأَمَانَاتِهِمْ وَعَهْدِهِمْ رَاعُونَ﴾
আর যারা রক্ষা করে নিজেদের আমানত [১] ও প্রতিশ্রুতি [২],
﴿وَالَّذِينَ هُمْ عَلَىٰ صَلَوَاتِهِمْ يُحَافِظُونَ﴾
আর যারা নিজেদের সালাতে থাকে যত্নবান [১]
﴿أُولَٰئِكَ هُمُ الْوَارِثُونَ﴾
তারাই হবে অধিকারী---
﴿الَّذِينَ يَرِثُونَ الْفِرْدَوْسَ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ﴾
যারা অধিকারী হবে ফিরদাউসের [১], যাতে তারা হবে স্থায়ী [২]।
﴿وَلَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنْسَانَ مِنْ سُلَالَةٍ مِنْ طِينٍ﴾
আর অবশ্যই আমরা মানুষকে সৃষ্টি করেছি মাটির উপাদান থেকে [১],
﴿ثُمَّ جَعَلْنَاهُ نُطْفَةً فِي قَرَارٍ مَكِينٍ﴾
তারপর আমরা তাকে শুক্রবিন্দুরূপে স্থাপন করি এক নিরাপদ ভাণ্ডারে;
﴿ثُمَّ خَلَقْنَا النُّطْفَةَ عَلَقَةً فَخَلَقْنَا الْعَلَقَةَ مُضْغَةً فَخَلَقْنَا الْمُضْغَةَ عِظَامًا فَكَسَوْنَا الْعِظَامَ لَحْمًا ثُمَّ أَنْشَأْنَاهُ خَلْقًا آخَرَ ۚ فَتَبَارَكَ اللَّهُ أَحْسَنُ الْخَالِقِينَ﴾
পরে আমরা শুক্রবিন্দুকে পরিণত করি ‘আলাকা-তে, অতঃপর ‘আলাকা-কে পরিণত করি গোশতপিণ্ডে, অতঃপর গোশতপিণ্ডকে পরিণত করি অস্থিতে; অতঃপর অস্থিকে ঢেকে দেই গোশত দিয়ে; তারপর তাকে গড়ে তুলি অন্য এক সৃষ্টিরূপে [১]। অতএব (দেখে নিন) সর্বোত্তম স্রষ্টা [২] আল্লাহ্ কত বরকতময় [৩]!
﴿ثُمَّ إِنَّكُمْ بَعْدَ ذَٰلِكَ لَمَيِّتُونَ﴾
এরপর তোমরা নিশ্চয় মরবে,
﴿ثُمَّ إِنَّكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ تُبْعَثُونَ﴾
তারপর কেয়ামতের দিন নিশ্চয় তোমাদেরকে উত্থিত করা হবে [১]।
﴿وَلَقَدْ خَلَقْنَا فَوْقَكُمْ سَبْعَ طَرَائِقَ وَمَا كُنَّا عَنِ الْخَلْقِ غَافِلِينَ﴾
আর অবশ্যই আমরা তোমাদের ঊর্ধ্বে সৃষ্টি করেছি সাতটি আসমান [১] এবং আমরা সৃষ্টি বিষয়ে মোটেই উদাসীন নই [২],
﴿وَأَنْزَلْنَا مِنَ السَّمَاءِ مَاءً بِقَدَرٍ فَأَسْكَنَّاهُ فِي الْأَرْضِ ۖ وَإِنَّا عَلَىٰ ذَهَابٍ بِهِ لَقَادِرُونَ﴾
আর আমরা আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করি পরিমিতভাবে [১]; অতঃপর আমরা তা মাটিতে সংরক্ষিত করি; আর অবশ্যই আমরা তা নিয়ে যেতেও সম্পূর্ণ সক্ষম [২]।
﴿فَأَنْشَأْنَا لَكُمْ بِهِ جَنَّاتٍ مِنْ نَخِيلٍ وَأَعْنَابٍ لَكُمْ فِيهَا فَوَاكِهُ كَثِيرَةٌ وَمِنْهَا تَأْكُلُونَ﴾
তারপর আমরা তা দিয়ে তোমাদের জন্য খেজুর ও আঙ্গুরের বাগান সৃষ্টি করি; এতে তোমাদের জন্য আছে প্রচুর ফল; আর তা থেকে তোমরা খেয়ে থাক [১];
﴿وَشَجَرَةً تَخْرُجُ مِنْ طُورِ سَيْنَاءَ تَنْبُتُ بِالدُّهْنِ وَصِبْغٍ لِلْآكِلِينَ﴾
আর সৃষ্টি করি এক গাছ যা জন্মায় সিনাই পর্বতে, এতে উৎপন্ন হয় তৈল এবং যারা খায় তাদের জন্য খাবার তথা তরকারী [১]।
﴿وَإِنَّ لَكُمْ فِي الْأَنْعَامِ لَعِبْرَةً ۖ نُسْقِيكُمْ مِمَّا فِي بُطُونِهَا وَلَكُمْ فِيهَا مَنَافِعُ كَثِيرَةٌ وَمِنْهَا تَأْكُلُونَ﴾
আর তোমাদের জন্য অবশ্যই শিক্ষণীয় বিষয় আছে চতুষ্পদ জন্তুগুলোয়; তোমাদেরকে আমরা পান করাই তাদের পেটে যা আছে তা থেকে এবং তাতে তোমাদের জন্য রয়েছে প্রচুর উপকারিতা; আর তোমরা তা থেকে খাও [১],
﴿وَعَلَيْهَا وَعَلَى الْفُلْكِ تُحْمَلُونَ﴾
আর তাতে ও নৌযানে তোমাদের বহনও করা হয়ে থাকে [১]।
﴿وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا نُوحًا إِلَىٰ قَوْمِهِ فَقَالَ يَا قَوْمِ اعْبُدُوا اللَّهَ مَا لَكُمْ مِنْ إِلَٰهٍ غَيْرُهُ ۖ أَفَلَا تَتَّقُونَ﴾
আর অবশ্যই আমরা নূহকে পাঠিয়েছিলাম তার সম্প্রদায়ের কাছে [১]। তিনি বললেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহ্র ‘ইবাদাত কর, তিনি ছাড়া তোমাদের অন্য কোন সত্য ইলাহ নেই, তবুও কি তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করবে না [২]?’
﴿فَقَالَ الْمَلَأُ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْ قَوْمِهِ مَا هَٰذَا إِلَّا بَشَرٌ مِثْلُكُمْ يُرِيدُ أَنْ يَتَفَضَّلَ عَلَيْكُمْ وَلَوْ شَاءَ اللَّهُ لَأَنْزَلَ مَلَائِكَةً مَا سَمِعْنَا بِهَٰذَا فِي آبَائِنَا الْأَوَّلِينَ﴾
অতঃপর তার সম্প্রদায়ের নেতারা, যারা কুফরী করেছিল [১], তারা বলল, ‘এ তো তোমাদের মত একজন মানুষই, সে তোমাদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করতে চাচ্ছে, আর আল্লাহ্ ইচ্ছে করলে ফেরেশতাই নাযিল করতেন; আমরা তো আমাদের পূর্বপুরুষদের কালে এরূপ ঘটেছে বলে শুনিনি।
﴿إِنْ هُوَ إِلَّا رَجُلٌ بِهِ جِنَّةٌ فَتَرَبَّصُوا بِهِ حَتَّىٰ حِينٍ﴾
‘এ তো এমন লোক যাকে উন্মাদনা পেয়ে বসেছে; কাজেই তোমরা এর সম্পর্কে কিছুকাল অপেক্ষা কর।’
﴿قَالَ رَبِّ انْصُرْنِي بِمَا كَذَّبُونِ﴾
নূহ বলেছিলেন, ‘হে আমার রব! আমাকে সাহায্য করুন, কারণ তারা আমার প্রতি মিথ্যারোপ করেছে [১]।’
﴿فَأَوْحَيْنَا إِلَيْهِ أَنِ اصْنَعِ الْفُلْكَ بِأَعْيُنِنَا وَوَحْيِنَا فَإِذَا جَاءَ أَمْرُنَا وَفَارَ التَّنُّورُ ۙ فَاسْلُكْ فِيهَا مِنْ كُلٍّ زَوْجَيْنِ اثْنَيْنِ وَأَهْلَكَ إِلَّا مَنْ سَبَقَ عَلَيْهِ الْقَوْلُ مِنْهُمْ ۖ وَلَا تُخَاطِبْنِي فِي الَّذِينَ ظَلَمُوا ۖ إِنَّهُمْ مُغْرَقُونَ﴾
তারপর আমরা তার কাছে ওহী পাঠালাম, ‘আপনি আমাদের চাক্ষুষ তত্ত্বাবধান ও আমাদের ওহী অনুযায়ী নৌযান নির্মাণ করুন, তারপর যখন আমাদের আদেশ আসবে এবং উনুন [১] উথলে উঠবে, তখন উঠিয়ে নেবেন প্রত্যেক জীবের এক এক জোড়া এবং আপনার পরিবার-পরিজনকে, তাদেরকে ছাড়া যাদের বিরুদ্ধে আগে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর তাদের সম্পর্কে আপনি আমাকে কিছু বলবেন না যারা যুলুম করেছে। তারা তো নিমজ্জিত হবে।
﴿فَإِذَا اسْتَوَيْتَ أَنْتَ وَمَنْ مَعَكَ عَلَى الْفُلْكِ فَقُلِ الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي نَجَّانَا مِنَ الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ﴾
অতঃপর যখন আপনি ও আপনার সঙ্গীরা নৌযানের উপরে স্থির হবেন তখন বলুন, ‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্রই, যিনি আমাদেরকে উদ্ধার করেছেন যালেম সম্প্রদায় থেকে।’
﴿وَقُلْ رَبِّ أَنْزِلْنِي مُنْزَلًا مُبَارَكًا وَأَنْتَ خَيْرُ الْمُنْزِلِينَ﴾
আরো বলুন, ‘হে আমার রব! আমাকে নামিয়ে দিন কল্যাণকরভাবে; আর আপনিই শ্রেষ্ঠ অবতারণকারী।’
﴿إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَاتٍ وَإِنْ كُنَّا لَمُبْتَلِينَ﴾
এতে অবশ্যই রয়েছে বহু নিদর্শন [১]। আর আমরা তো তাদেরকে পরীক্ষা করেছিলাম [২]।
﴿ثُمَّ أَنْشَأْنَا مِنْ بَعْدِهِمْ قَرْنًا آخَرِينَ﴾
তারপর আমরা তাদের পরে অন্য এক প্রজন্ম [১] সৃষ্টি করেছিলাম;
﴿فَأَرْسَلْنَا فِيهِمْ رَسُولًا مِنْهُمْ أَنِ اعْبُدُوا اللَّهَ مَا لَكُمْ مِنْ إِلَٰهٍ غَيْرُهُ ۖ أَفَلَا تَتَّقُونَ﴾
এরপর আমরা তাদেরই একজনকে তাদের কাছে রাসূল করে পাঠিয়েছিলাম! তিনি বলেছিলেন, ‘তোমরা আল্লাহ্র ‘ইবাদাত কর, তিনি ছাড়া তোমাদের অন্য কোন সত্য ইলাহ নেই [১], তবুও কি তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করবে না?’
﴿وَقَالَ الْمَلَأُ مِنْ قَوْمِهِ الَّذِينَ كَفَرُوا وَكَذَّبُوا بِلِقَاءِ الْآخِرَةِ وَأَتْرَفْنَاهُمْ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا مَا هَٰذَا إِلَّا بَشَرٌ مِثْلُكُمْ يَأْكُلُ مِمَّا تَأْكُلُونَ مِنْهُ وَيَشْرَبُ مِمَّا تَشْرَبُونَ﴾
আর তারা সম্প্রদায়ের নেতারা, যারা কুফরী করেছিল ও আখেরাতের সাক্ষাতে মিথ্যারোপ করেছিল এবং যাদেরকে আমরা দিয়েছিলাম দুনিয়ার জীবনের প্রচুর ভোগ-সম্ভার [১], তারা বলেছিল, ‘এ তো তোমাদেরই মত একজন মানুষ; তোমরা যা খাও, সে তা-ই খায় এবং তোমরা যা পান কর সেও তাই পান করে;
﴿وَلَئِنْ أَطَعْتُمْ بَشَرًا مِثْلَكُمْ إِنَّكُمْ إِذًا لَخَاسِرُونَ﴾
‘যদি তোমরা তোমাদেরই মত একজন মানুষের আনুগত্য কর তবে তোমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্থ হবে [১];
﴿أَيَعِدُكُمْ أَنَّكُمْ إِذَا مِتُّمْ وَكُنْتُمْ تُرَابًا وَعِظَامًا أَنَّكُمْ مُخْرَجُونَ﴾
‘সে কি তোমাদেরকে এ প্রতিশ্রুতিই দেয় যে, তোমাদের মৃত্যু হলে এবং তোমরা মাটি ও অস্থিতে পরিণত হলেও তোমাদেরকে বের করা হবে?
﴿۞ هَيْهَاتَ هَيْهَاتَ لِمَا تُوعَدُونَ﴾
‘অসম্ভব, তোমাদেরকে যে বিষয় প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তা অসম্ভব।
﴿إِنْ هِيَ إِلَّا حَيَاتُنَا الدُّنْيَا نَمُوتُ وَنَحْيَا وَمَا نَحْنُ بِمَبْعُوثِينَ﴾
‘একমাত্র দুনিয়ার জীবনই আমাদের জীবন, আমরা মরি বাঁচি এখানেই। আর আমরা পুনরুত্থিত হবার নই।
﴿إِنْ هُوَ إِلَّا رَجُلٌ افْتَرَىٰ عَلَى اللَّهِ كَذِبًا وَمَا نَحْنُ لَهُ بِمُؤْمِنِينَ﴾
‘সে তো এমন ব্যাক্তি যে আল্লাহ্ সম্বন্ধে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে, আমরা তো তাকে বিশ্বাস করার নই।’
﴿قَالَ رَبِّ انْصُرْنِي بِمَا كَذَّبُونِ﴾
তিনি বললেন, ‘হে আমার রব! আমাকে সাহায্য করুন; কারণ তারা আমার প্রতি মিথ্যারোপ করেছে।’
﴿قَالَ عَمَّا قَلِيلٍ لَيُصْبِحُنَّ نَادِمِينَ﴾
আল্লাহ্ বললেন। ‘অচিরেই তারা অনুতপ্ত হবে।’
﴿فَأَخَذَتْهُمُ الصَّيْحَةُ بِالْحَقِّ فَجَعَلْنَاهُمْ غُثَاءً ۚ فَبُعْدًا لِلْقَوْمِ الظَّالِمِينَ﴾
তারপর এক বিরাট আওয়াজ সত্য-ন্যায়ের সাথে [১] তাদেরকে পাকড়াও করল, ফলে আমরা তাদেরকে তরঙ্গ-তাড়িত আবর্জনার মত [২] করে দিলাম। কাজেই যালেম সম্প্রদায়ের জন্য রইল ধ্বংস।
﴿ثُمَّ أَنْشَأْنَا مِنْ بَعْدِهِمْ قُرُونًا آخَرِينَ﴾
তারপর তাদের পরে আমরা বহু প্রজন্ম সৃষ্টি করেছি।
﴿مَا تَسْبِقُ مِنْ أُمَّةٍ أَجَلَهَا وَمَا يَسْتَأْخِرُونَ﴾
কোন জাতিই তার নির্ধারিত কালকে ত্বরান্বিত করতে পারে না, বিলম্বিতও করতে পারে না।
﴿ثُمَّ أَرْسَلْنَا رُسُلَنَا تَتْرَىٰ ۖ كُلَّ مَا جَاءَ أُمَّةً رَسُولُهَا كَذَّبُوهُ ۚ فَأَتْبَعْنَا بَعْضَهُمْ بَعْضًا وَجَعَلْنَاهُمْ أَحَادِيثَ ۚ فَبُعْدًا لِقَوْمٍ لَا يُؤْمِنُونَ﴾
এরপর আমরা একের পর এক আমাদের রাসূলগণকে প্রেরণ করেছি। যখনই কোন জাতির কাছে তার রাসূল এসেছেন তখনই তারা তার প্রতি মিথ্যারোপ করেছে। অতঃপর আমরা তাদের একের পর এককে ধ্বংস করে তাদেরকে কাহিনীর বিষয় করে দিয়েছি। কাজেই যারা ঈমান আনে না সে সমস্ত সম্প্রদায়ের জন্য ধ্বংসই রইল!
﴿ثُمَّ أَرْسَلْنَا مُوسَىٰ وَأَخَاهُ هَارُونَ بِآيَاتِنَا وَسُلْطَانٍ مُبِينٍ﴾
তারপর আমরা আমাদের নিদর্শনসমূহ এবং সুস্পষ্ট প্রমাণসহ মূসা ও তার ভাই হারূনকে পাঠালাম [১],
﴿إِلَىٰ فِرْعَوْنَ وَمَلَئِهِ فَاسْتَكْبَرُوا وَكَانُوا قَوْمًا عَالِينَ﴾
ফির‘আউন ও তার পরিষদবর্গের কাছে। কিন্তু তারা অহংকার করল; আর তারা ছিল উদ্ধত সম্প্রদায় [১]।
﴿فَقَالُوا أَنُؤْمِنُ لِبَشَرَيْنِ مِثْلِنَا وَقَوْمُهُمَا لَنَا عَابِدُونَ﴾
অতঃপর তারা বলল, ‘আমরা কি এমন দু’ব্যাক্তিতে বিশ্বাস স্থাপন করব যারা আমাদেরই মত, অথচ তাদের সম্প্রদায় আমাদের দাসত্বকারী [১]?’
﴿فَكَذَّبُوهُمَا فَكَانُوا مِنَ الْمُهْلَكِينَ﴾
সুতরাং তারা তাদের উভয়ের প্রতি মিথ্যারোপ করল, ফলে তারা ধ্বংসপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হল [১]।
﴿وَلَقَدْ آتَيْنَا مُوسَى الْكِتَابَ لَعَلَّهُمْ يَهْتَدُونَ﴾
আর আমরা তো মূসাকে দিয়েছিলাম কিতাব; যাতে তারা হেদায়েত পায়।
﴿وَجَعَلْنَا ابْنَ مَرْيَمَ وَأُمَّهُ آيَةً وَآوَيْنَاهُمَا إِلَىٰ رَبْوَةٍ ذَاتِ قَرَارٍ وَمَعِينٍ﴾
আর আমরা মারইয়াম-পুত্র ও তার জননীকে করেছিলাম এক নিদর্শন এবং তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছিলাম এক অবস্থানযোগ্য ও প্রস্রবণবিশিষ্ট উচ্চ ভূমিতে [১]।
﴿يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا ۖ إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ﴾
‘হে রাসূলগণ [১]! আপনারা পবিত্র বস্তু থেকে খাদ্য গ্রহণ করুন এবং সৎকাজ করুন [২]; নিশ্চয় আপনারা যা করেন সে সম্পর্কে আমি সবিশেষ অবগত।
﴿وَإِنَّ هَٰذِهِ أُمَّتُكُمْ أُمَّةً وَاحِدَةً وَأَنَا رَبُّكُمْ فَاتَّقُونِ﴾
‘আর আপনাদের এ উম্মত তো একই উম্মত [১] এবং আমিই আপনাদের রব; অতএব আমারই তাকওয়া অবলম্বন করুন [২]।’
﴿فَتَقَطَّعُوا أَمْرَهُمْ بَيْنَهُمْ زُبُرًا ۖ كُلُّ حِزْبٍ بِمَا لَدَيْهِمْ فَرِحُونَ﴾
অতঃপর লোকেরা তাদের নিজেদের মধ্যে তাদের এ বিষয় তথা দ্বীনকে বহুধা বিভক্ত করেছে [১]। প্রত্যেক দলই তাদের কাছে যা আছে তা নিয়ে আনন্দিত।
﴿فَذَرْهُمْ فِي غَمْرَتِهِمْ حَتَّىٰ حِينٍ﴾
কাজেই কিছু কালের জন্য তাদেরকে স্বীয় বিভ্রান্তিতে ছেড়ে দিন [১]।
﴿أَيَحْسَبُونَ أَنَّمَا نُمِدُّهُمْ بِهِ مِنْ مَالٍ وَبَنِينَ﴾
তারা কি মনে করে যে, আমরা তাদেরকে যে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দ্বারা সহযোগিতা করেছি, তার মাধ্যমে,
﴿نُسَارِعُ لَهُمْ فِي الْخَيْرَاتِ ۚ بَلْ لَا يَشْعُرُونَ﴾
তাদের জন্য সকল মঙ্গল ত্বরান্বিত করছি? না, তারা উপলদ্ধি করে না [১]।
﴿إِنَّ الَّذِينَ هُمْ مِنْ خَشْيَةِ رَبِّهِمْ مُشْفِقُونَ﴾
নিশ্চয় যারা তাদের রব-এর ভয়ে সন্ত্রস্ত,
﴿وَالَّذِينَ هُمْ بِآيَاتِ رَبِّهِمْ يُؤْمِنُونَ﴾
আর যারা তাদের রব-এর নিদর্শনাবলীতে ঈমান আনে,
﴿وَالَّذِينَ هُمْ بِرَبِّهِمْ لَا يُشْرِكُونَ﴾
আর যারা তাদের রব-এর সাথে শির্ক করে না [১],
﴿وَالَّذِينَ يُؤْتُونَ مَا آتَوْا وَقُلُوبُهُمْ وَجِلَةٌ أَنَّهُمْ إِلَىٰ رَبِّهِمْ رَاجِعُونَ﴾
আর যারা যা দেয়ার তা দেয় [১] ভীত-কম্পিত হৃদয়ে, এজন্য যে তারা তাদের রব-এর কাছে প্রত্যাবর্তনকারী [২]।
﴿أُولَٰئِكَ يُسَارِعُونَ فِي الْخَيْرَاتِ وَهُمْ لَهَا سَابِقُونَ﴾
তারাই দ্রুত সম্পাদন করে কল্যাণকর কাজ এবং তারা তাতে অগ্রগামী হয় [১]।
﴿وَلَا نُكَلِّفُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا ۖ وَلَدَيْنَا كِتَابٌ يَنْطِقُ بِالْحَقِّ ۚ وَهُمْ لَا يُظْلَمُونَ﴾
আর আমরা কাউকেও তার সাধ্যের বেশী দায়িত্ব দেই না। আর আমাদের কাছে আছে এমন এক কিতাব [১] যা সত্য ব্যক্ত করে এবং তাদের প্রতি যুলুম করা হবে না।
﴿بَلْ قُلُوبُهُمْ فِي غَمْرَةٍ مِنْ هَٰذَا وَلَهُمْ أَعْمَالٌ مِنْ دُونِ ذَٰلِكَ هُمْ لَهَا عَامِلُونَ﴾
বরং এ বিষয় তাদের অন্তর অজ্ঞানতায় আচ্ছন্ন, এছাড়াও তাদের আরো কাজ আছে যা তারা করছে [১]।
﴿حَتَّىٰ إِذَا أَخَذْنَا مُتْرَفِيهِمْ بِالْعَذَابِ إِذَا هُمْ يَجْأَرُونَ﴾
শেষ পর্যন্ত যখন আমরা তাদের বিলাসী [১] ব্যাক্তিদেরকে শাস্তি দ্বারা পাকড়াও করি তখনই তারা আর্তনাদ করে উঠে।
﴿لَا تَجْأَرُوا الْيَوْمَ ۖ إِنَّكُمْ مِنَّا لَا تُنْصَرُونَ﴾
তাদেরকে বলা হবে, ‘আজ আর্তনাদ করো না, তোমাদেরকে তো আমাদের পক্ষ থেকে সাহায্য করা হবে না।’
﴿قَدْ كَانَتْ آيَاتِي تُتْلَىٰ عَلَيْكُمْ فَكُنْتُمْ عَلَىٰ أَعْقَابِكُمْ تَنْكِصُونَ﴾
আমার আয়াত তো তোমাদের কাছে তিলাওয়াত করা হত [১], কিন্তু তোমরা উল্টো পায়ে পিছনে সরে পড়তে---
﴿مُسْتَكْبِرِينَ بِهِ سَامِرًا تَهْجُرُونَ﴾
দম্ভভরে এ বিষয়ে অর্থহীন গল্প-গুজবে [১] রাত মাতিয়ে [২] তোমরা খারাপ কথা বলতে।
﴿أَفَلَمْ يَدَّبَّرُوا الْقَوْلَ أَمْ جَاءَهُمْ مَا لَمْ يَأْتِ آبَاءَهُمُ الْأَوَّلِينَ﴾
তবে কি তারা এ বাণীতে চিন্তা-গবেষণা করেনি [১]? নাকি এ জন্যে যে, তাদের কাছে এমন কিছু এসেছে যা তাদের পূর্বপুরুষদের কাছে আসেনি [২]?
﴿أَمْ لَمْ يَعْرِفُوا رَسُولَهُمْ فَهُمْ لَهُ مُنْكِرُونَ﴾
নাকি তারা তাদের রাসূলকে চিনে না বলে তাকে অস্বীকার করছে [১]?
﴿أَمْ يَقُولُونَ بِهِ جِنَّةٌ ۚ بَلْ جَاءَهُمْ بِالْحَقِّ وَأَكْثَرُهُمْ لِلْحَقِّ كَارِهُونَ﴾
নাকি তারা বলে যে, তিনি উন্মাদনাগ্রস্ত? [১] না, তিনি তাদের কাছে সত্য এনেছেন, আর তাদের অধিকাংশই সত্যকে অপছন্দকারী [২]।
﴿وَلَوِ اتَّبَعَ الْحَقُّ أَهْوَاءَهُمْ لَفَسَدَتِ السَّمَاوَاتُ وَالْأَرْضُ وَمَنْ فِيهِنَّ ۚ بَلْ أَتَيْنَاهُمْ بِذِكْرِهِمْ فَهُمْ عَنْ ذِكْرِهِمْ مُعْرِضُونَ﴾
আর হক্ক যদি তাদের কামনা-বাসনার অনুগামী হত তবে বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ত আসমানসমূহ ও যমীন এবং এগুলোতে যা কিছু আছে সবকিছুই [১]। বরং আমরা তাদের কাছে নিয়ে এসেছি তাদের ইজ্জত ও সম্মান সম্বলিত যিকর [২] কিন্তু তারা তাদের এ যিকর (কুরআন) থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
﴿أَمْ تَسْأَلُهُمْ خَرْجًا فَخَرَاجُ رَبِّكَ خَيْرٌ ۖ وَهُوَ خَيْرُ الرَّازِقِينَ﴾
নাকি আপনি তাদের আছে কোন প্রতিদান চান? [১] আপনার রব-এর প্রতিদানই তো শ্রেষ্ঠ এবং তিনিই শ্রেষ্ঠ রিযিকদাতা।
﴿وَإِنَّكَ لَتَدْعُوهُمْ إِلَىٰ صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ﴾
আর আপনি তো তাদেরকে সরল পথের দিকেই আহ্বান করছেন।
﴿وَإِنَّ الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِالْآخِرَةِ عَنِ الصِّرَاطِ لَنَاكِبُونَ﴾
আর নিশ্চয় যারা আখেরাতে ঈমান রাখে না, তারা সরল পথ থেকে বিচ্যুত,
﴿۞ وَلَوْ رَحِمْنَاهُمْ وَكَشَفْنَا مَا بِهِمْ مِنْ ضُرٍّ لَلَجُّوا فِي طُغْيَانِهِمْ يَعْمَهُونَ﴾
আর যদি আমরা তাদেরকে দয়া করি এবং তাদের দুঃখ-দৈন্য দূর করি তবুও তারা অবাধ্যতায় বিভ্রান্তের ন্যায় ঘুরতে থাকবে।
﴿وَلَقَدْ أَخَذْنَاهُمْ بِالْعَذَابِ فَمَا اسْتَكَانُوا لِرَبِّهِمْ وَمَا يَتَضَرَّعُونَ﴾
আর অবশ্যই আমরা তাদেরকে শাস্তি দ্বারা পাকড়াও করলাম, তারপরও তারা তাদের রব-এর প্রতি অবনত হল না এবং কাতর প্রার্থনাও করল না [১]।
﴿حَتَّىٰ إِذَا فَتَحْنَا عَلَيْهِمْ بَابًا ذَا عَذَابٍ شَدِيدٍ إِذَا هُمْ فِيهِ مُبْلِسُونَ﴾
অবশেষে যখন আমরা তাদের উপর কঠিন কোন শাস্তির দুয়ার খুলে দেব তখনই তারা এতে আশাহত হয়ে পড়বে [১]।
﴿وَهُوَ الَّذِي أَنْشَأَ لَكُمُ السَّمْعَ وَالْأَبْصَارَ وَالْأَفْئِدَةَ ۚ قَلِيلًا مَا تَشْكُرُونَ﴾
আর তিনিই তোমাদের জন্য কান, চোখ ও অন্তকরণ সৃষ্টি করেছেন; তোমরা খুব অল্পই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে থাক।
﴿وَهُوَ الَّذِي ذَرَأَكُمْ فِي الْأَرْضِ وَإِلَيْهِ تُحْشَرُونَ﴾
আর তিনিই তোমাদেরকে যমীনে বিস্তৃত করেছেন [১] এবং তোমাদেরকে তাঁরই কাছে একত্র করা হবে।
﴿وَهُوَ الَّذِي يُحْيِي وَيُمِيتُ وَلَهُ اخْتِلَافُ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ ۚ أَفَلَا تَعْقِلُونَ﴾
আর তিনিই জীবিত করেন এবং মৃত্যু দেন আর তাঁরই অধিকারে রাত ও দিনের পরিবর্তন [১]। তবুও কি তোমরা বুঝবে না?
﴿بَلْ قَالُوا مِثْلَ مَا قَالَ الْأَوَّلُونَ﴾
বরং তারা বলে, যেমন বলেছিল পূর্ববর্তীরা।
﴿قَالُوا أَإِذَا مِتْنَا وَكُنَّا تُرَابًا وَعِظَامًا أَإِنَّا لَمَبْعُوثُونَ﴾
তারা বলে ‘আমাদের মৃত্যু ঘটলে এবং আমরা মাটি ও অস্থিতে পরিণত হলেও কি আমরা পুনরুত্থিত হব?
﴿لَقَدْ وُعِدْنَا نَحْنُ وَآبَاؤُنَا هَٰذَا مِنْ قَبْلُ إِنْ هَٰذَا إِلَّا أَسَاطِيرُ الْأَوَّلِينَ﴾
‘আমাদেরকে তো এ বিষয়েই প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হয়েছে এবং অতীতে আমাদের পূর্বপুরুষদেরকেও। এটা তো পূর্ববর্তীদের উপকথা ছাড়া আর কিছুই নয়।’
﴿قُلْ لِمَنِ الْأَرْضُ وَمَنْ فِيهَا إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ﴾
বলুন, ‘যমীনে এবং এতে যা কিছু আছে এগুলো(র মালিকানা) কার? যদি তোমরা জান (তবে বল)।’
﴿سَيَقُولُونَ لِلَّهِ ۚ قُلْ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ﴾
অবশ্যই তারা বলবে, ‘আল্লাহ্র।’ বলুন, ‘তবুও কি তোমরা শিক্ষা গ্রহণ করবে না?
﴿قُلْ مَنْ رَبُّ السَّمَاوَاتِ السَّبْعِ وَرَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ﴾
বলুন, ‘সাত আসমান ও মহা-‘আরশের রব কে?’
﴿سَيَقُولُونَ لِلَّهِ ۚ قُلْ أَفَلَا تَتَّقُونَ﴾
অবশ্যই তারা বলবে, ‘আল্লাহ্।’ বলুন, ‘তবুও কি তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করবে না?’
﴿قُلْ مَنْ بِيَدِهِ مَلَكُوتُ كُلِّ شَيْءٍ وَهُوَ يُجِيرُ وَلَا يُجَارُ عَلَيْهِ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ﴾
বলুন, ‘কার হাতে সমস্ত বস্তুর কর্তৃত্ব? যিনি আশ্রয় প্রদান করেন অথচ তাঁর বিপক্ষে কেউ কাউকে আশ্রয় দিতে পারে না [১], যদি তোমরা জান (তবে বল)।’
﴿سَيَقُولُونَ لِلَّهِ ۚ قُلْ فَأَنَّىٰ تُسْحَرُونَ﴾
অবশ্যই তারা বলবে, ‘আল্লাহ্।’ বলুন, ‘তাহলে কোথা থেকে তোমরা জাদুগ্রস্থ হচ্ছো?’
﴿بَلْ أَتَيْنَاهُمْ بِالْحَقِّ وَإِنَّهُمْ لَكَاذِبُونَ﴾
বরং আমরা তো তাদের কাছে হক নিয়ে এসেছি; আর নিশ্চয় তারা মিথ্যাবাদী [১]।
﴿مَا اتَّخَذَ اللَّهُ مِنْ وَلَدٍ وَمَا كَانَ مَعَهُ مِنْ إِلَٰهٍ ۚ إِذًا لَذَهَبَ كُلُّ إِلَٰهٍ بِمَا خَلَقَ وَلَعَلَا بَعْضُهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ ۚ سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يَصِفُونَ﴾
আল্লাহ্ কোন সন্তান গ্রহণ করেননি এবং তাঁর সাথে অন্য কোন ইলাহও নেই; যদি থাকত তবে প্রত্যেক ইলাহ স্বীয় সৃষ্টি নিয়ে পৃথক হয়ে যেত এবং একে অন্যের উপর প্রাধান্য বিস্তার করত [১]। তারা যে গুনে তাকে গুণান্বিত করে তা থেকে আল্লাহ্ কত পবিত্র- মহান!
﴿عَالِمِ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ فَتَعَالَىٰ عَمَّا يُشْرِكُونَ﴾
তিনি গায়েব ও উপস্থিতের জ্ঞাণী, সুতরাং তারা যা কিছু শরীক করে তিনি তার ঊর্ধ্বে।
﴿قُلْ رَبِّ إِمَّا تُرِيَنِّي مَا يُوعَدُونَ﴾
বলুন, ‘হে আমার রব! যে বিষয়ে তাদেরকে প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হচ্ছে, আপনি যদি তা আমাকে দেখাতে চান,
﴿رَبِّ فَلَا تَجْعَلْنِي فِي الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ﴾
‘তবে, হে আমার রব! আপনি আমাকে যালেম সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত করবেন না [১]।’
﴿وَإِنَّا عَلَىٰ أَنْ نُرِيَكَ مَا نَعِدُهُمْ لَقَادِرُونَ﴾
আর আমরা তাদেরকে যে বিষয়ে প্রতিশ্রুতি প্রদান করছি, আমরা তা আপনাকে দেখাতে অবশ্যই সক্ষম [১]।
﴿ادْفَعْ بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ السَّيِّئَةَ ۚ نَحْنُ أَعْلَمُ بِمَا يَصِفُونَ﴾
মন্দের মুকাবিলা করুন যা উত্তম তা দ্বারা; তারা (আমাকে) যে গুণে গুণান্বিত করে আমরা সে সম্বন্ধে সবিশেষ অবগত [১]।
﴿وَقُلْ رَبِّ أَعُوذُ بِكَ مِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ﴾
আর বলুন, ‘হে আমার রব! আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি শয়তানের প্ররোচনা থেকে [১]।’
﴿وَأَعُوذُ بِكَ رَبِّ أَنْ يَحْضُرُونِ﴾
‘আর হে আমার রব! আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি আমার কাছে তাদের উপস্থিতি থেকে।’
﴿حَتَّىٰ إِذَا جَاءَ أَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ رَبِّ ارْجِعُونِ﴾
অবশেষে যখন তাদের কারো মৃত্যু আসে, সে বলে, ‘হে আমার রব! আমাকে আবার ফেরত পাঠান [১],
﴿لَعَلِّي أَعْمَلُ صَالِحًا فِيمَا تَرَكْتُ ۚ كَلَّا ۚ إِنَّهَا كَلِمَةٌ هُوَ قَائِلُهَا ۖ وَمِنْ وَرَائِهِمْ بَرْزَخٌ إِلَىٰ يَوْمِ يُبْعَثُونَ﴾
‘যাতে আমি সৎকাজ করতে পারি যা আমি আগে করিনি [১]।’ না, এটা হবার নয়। এটা তো তার একটি বাক্য মাত্র যা সে বলবেই [২]। তাদের সামনে বার্যাখ [৩] থাকবে উত্থান দিন পর্যন্ত।
﴿فَإِذَا نُفِخَ فِي الصُّورِ فَلَا أَنْسَابَ بَيْنَهُمْ يَوْمَئِذٍ وَلَا يَتَسَاءَلُونَ﴾
অতঃপর যেদিন শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে [১] সেদিন পরস্পরের মধ্যে আত্মীয়তার বন্ধন থাকবে না [২] এবং একে অন্যের খোঁজ-খবর নেবে না [৩],
﴿فَمَنْ ثَقُلَتْ مَوَازِينُهُ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ﴾
অতঃপর যাদের পাল্লা ভারী হবে তারাই হবে সফলকাম
﴿وَمَنْ خَفَّتْ مَوَازِينُهُ فَأُولَٰئِكَ الَّذِينَ خَسِرُوا أَنْفُسَهُمْ فِي جَهَنَّمَ خَالِدُونَ﴾
আর যাদের পাল্লা হালকা হবে, তারাই নিজেদের ক্ষতি করেছে; তারা জাহান্নামে স্থায়ী হবে।
﴿تَلْفَحُ وُجُوهَهُمُ النَّارُ وَهُمْ فِيهَا كَالِحُونَ﴾
আগুন তাদের মুখমণ্ডল দগ্ধ করবে এবং তারা সেখানে থাকবে বীভৎস চেহারায় [১];
﴿أَلَمْ تَكُنْ آيَاتِي تُتْلَىٰ عَلَيْكُمْ فَكُنْتُمْ بِهَا تُكَذِّبُونَ﴾
তোমাদের কাছে কি আমার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হত না? তারপর তোমরা সেসবে মিথ্যারোপ করতে [১]।
﴿قَالُوا رَبَّنَا غَلَبَتْ عَلَيْنَا شِقْوَتُنَا وَكُنَّا قَوْمًا ضَالِّينَ﴾
তারা বলবে, ‘হে আমাদের রব! দুর্ভাগ্য আমাদেরকে পেয়ে বসেছিল এবং আমরা ছিলাম এক পথভ্রষ্ট সম্প্রদায়;
﴿رَبَّنَا أَخْرِجْنَا مِنْهَا فَإِنْ عُدْنَا فَإِنَّا ظَالِمُونَ﴾
‘হে আমাদের রব! এ আগুন থেকে আমাদেরকে বের করুন; তারপর আমরা যদি পুনরায় কুফরী করি, তবে তো আমরা অবশ্যই যালিম হব।’
﴿قَالَ اخْسَئُوا فِيهَا وَلَا تُكَلِّمُونِ﴾
আল্লাহ্ বলবেন, ‘তোমরা হীন অবস্থায় এখানেই থাক এবং আমার সাথে কোন কথা বলবে না [১]।
﴿إِنَّهُ كَانَ فَرِيقٌ مِنْ عِبَادِي يَقُولُونَ رَبَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا وَأَنْتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ﴾
আমার বান্দাগণের মধ্যে একদল ছিল যারা বলত, ‘হে আমাদের রব! আমরা ঈমান এনেছি অতএব আপনি আমাদেরকে ক্ষমা করুন ও দয়া করুন, আর আপনি তো সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু।’
﴿فَاتَّخَذْتُمُوهُمْ سِخْرِيًّا حَتَّىٰ أَنْسَوْكُمْ ذِكْرِي وَكُنْتُمْ مِنْهُمْ تَضْحَكُونَ﴾
‘কিন্তু তাদেরকে নিয়ে তোমরা এতো ঠাট্টা-বিদ্রূপ করতে যে, তা তোমাদেরকে ভুলিয়ে দিয়েছিল আমার স্মরণ। আর তোমরা তাদের নিয়ে হাসি-ঠাট্টাই করতে।’
﴿إِنِّي جَزَيْتُهُمُ الْيَوْمَ بِمَا صَبَرُوا أَنَّهُمْ هُمُ الْفَائِزُونَ﴾
‘নিশ্চয় আমি আজ তাদেরকে তাদের ধৈর্যের কারণে এমনভাবে পুরস্কৃত করলাম যে, তারাই হল সফলকাম।’
﴿قَالَ كَمْ لَبِثْتُمْ فِي الْأَرْضِ عَدَدَ سِنِينَ﴾
আল্লাহ্ বলবেন, ‘তোমরা যমীনে কত বছর অবস্থান করেছিলে?’
﴿قَالُوا لَبِثْنَا يَوْمًا أَوْ بَعْضَ يَوْمٍ فَاسْأَلِ الْعَادِّينَ﴾
তারা বলবে, ‘আমরা অবস্থান করেছিলাম একদিন বা দিনের কিছু অংশ; সুতরাং আপনি গণনাকারীদেরকে জিজ্ঞেস করুন।’
﴿قَالَ إِنْ لَبِثْتُمْ إِلَّا قَلِيلًا ۖ لَوْ أَنَّكُمْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ﴾
তিনি বলবেন, ‘তোমরা অল্প কালই অবস্থান করেছিলে, যদি তোমরা জানতে!
﴿أَفَحَسِبْتُمْ أَنَّمَا خَلَقْنَاكُمْ عَبَثًا وَأَنَّكُمْ إِلَيْنَا لَا تُرْجَعُونَ﴾
‘তোমরা কি মনে করেছিলে যে, আমরা তোমাদেরকে অনর্থক সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে আনা হবে না?’
﴿فَتَعَالَى اللَّهُ الْمَلِكُ الْحَقُّ ۖ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيمِ﴾
সুতরাং আল্লাহ্ মহিমান্বিত, প্রকৃত মালিক, তিনি ছাড়া কোন হক্ক ইলাহ নেই; তিনি সম্মানিত ‘আরাশের রব।
﴿وَمَنْ يَدْعُ مَعَ اللَّهِ إِلَٰهًا آخَرَ لَا بُرْهَانَ لَهُ بِهِ فَإِنَّمَا حِسَابُهُ عِنْدَ رَبِّهِ ۚ إِنَّهُ لَا يُفْلِحُ الْكَافِرُونَ﴾
আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্র সাথে অন্য ইলাহকে ডাকে, এ বিষয়ে তার নিকট কোন প্ৰমাণ নেই; তার হিসাব তো তার রব-এর নিকটই আছে; নিশ্চয় কাফেররা সফলকাম হবে না।
﴿وَقُلْ رَبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَأَنْتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ﴾
আর বলুন, ‘হে আমার রব! ক্ষমা করুন ও দয়া করুন, আর আপনিই তো সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু।’
الترجمات والتفاسير لهذه السورة:
- سورة المؤمنون : الترجمة الأمهرية አማርኛ - الأمهرية
- سورة المؤمنون : اللغة العربية - المختصر في تفسير القرآن الكريم العربية - العربية
- سورة المؤمنون : اللغة العربية - التفسير الميسر العربية - العربية
- سورة المؤمنون : اللغة العربية - معاني الكلمات العربية - العربية
- سورة المؤمنون : الترجمة الأسامية অসমীয়া - الأسامية
- سورة المؤمنون : الترجمة الأذرية Azərbaycanca / آذربايجان - الأذرية
- سورة المؤمنون : الترجمة البنغالية বাংলা - البنغالية
- سورة المؤمنون : الترجمة البوسنية للمختصر في تفسير القرآن الكريم Bosanski - البوسنية
- سورة المؤمنون : الترجمة البوسنية - كوركت Bosanski - البوسنية
- سورة المؤمنون : الترجمة البوسنية - ميهانوفيتش Bosanski - البوسنية
- سورة المؤمنون : الترجمة الألمانية - بوبنهايم Deutsch - الألمانية
- سورة المؤمنون : الترجمة الألمانية - أبو رضا Deutsch - الألمانية
- سورة المؤمنون : الترجمة الإنجليزية - صحيح انترناشونال English - الإنجليزية
- سورة المؤمنون : الترجمة الإنجليزية - هلالي-خان English - الإنجليزية
- سورة المؤمنون : الترجمة الإسبانية Español - الإسبانية
- سورة المؤمنون : الترجمة الإسبانية - المنتدى الإسلامي Español - الإسبانية
- سورة المؤمنون : الترجمة الإسبانية (أمريكا اللاتينية) - المنتدى الإسلامي Español - الإسبانية
- سورة المؤمنون : الترجمة الفارسية للمختصر في تفسير القرآن الكريم فارسی - الفارسية
- سورة المؤمنون : الترجمة الفارسية - دار الإسلام فارسی - الفارسية
- سورة المؤمنون : الترجمة الفارسية - حسين تاجي فارسی - الفارسية
- سورة المؤمنون : الترجمة الفرنسية - المنتدى الإسلامي Français - الفرنسية
- سورة المؤمنون : الترجمة الفرنسية للمختصر في تفسير القرآن الكريم Français - الفرنسية
- سورة المؤمنون : الترجمة الغوجراتية ગુજરાતી - الغوجراتية
- سورة المؤمنون : الترجمة الهوساوية هَوُسَ - الهوساوية
- سورة المؤمنون : الترجمة الهندية हिन्दी - الهندية
- سورة المؤمنون : الترجمة الإندونيسية للمختصر في تفسير القرآن الكريم Bahasa Indonesia - الأندونيسية
- سورة المؤمنون : الترجمة الإندونيسية - شركة سابق Bahasa Indonesia - الأندونيسية
- سورة المؤمنون : الترجمة الإندونيسية - المجمع Bahasa Indonesia - الأندونيسية
- سورة المؤمنون : الترجمة الإندونيسية - وزارة الشؤون الإسلامية Bahasa Indonesia - الأندونيسية
- سورة المؤمنون : الترجمة الإيطالية للمختصر في تفسير القرآن الكريم Italiano - الإيطالية
- سورة المؤمنون : الترجمة الإيطالية Italiano - الإيطالية
- سورة المؤمنون : الترجمة اليابانية 日本語 - اليابانية
- سورة المؤمنون : الترجمة الكازاخية - مجمع الملك فهد Қазақша - الكازاخية
- سورة المؤمنون : الترجمة الكازاخية - جمعية خليفة ألطاي Қазақша - الكازاخية
- سورة المؤمنون : الترجمة الخميرية ភាសាខ្មែរ - الخميرية
- سورة المؤمنون : الترجمة الكورية 한국어 - الكورية
- سورة المؤمنون : الترجمة الكردية Kurdî / كوردی - الكردية
- سورة المؤمنون : الترجمة المليبارية മലയാളം - المليبارية
- سورة المؤمنون : الترجمة الماراتية मराठी - الماراتية
- سورة المؤمنون : الترجمة النيبالية नेपाली - النيبالية
- سورة المؤمنون : الترجمة الأورومية Oromoo - الأورومية
- سورة المؤمنون : الترجمة البشتوية پښتو - البشتوية
- سورة المؤمنون : الترجمة البرتغالية Português - البرتغالية
- سورة المؤمنون : الترجمة السنهالية සිංහල - السنهالية
- سورة المؤمنون : الترجمة الصومالية Soomaaliga - الصومالية
- سورة المؤمنون : الترجمة الألبانية Shqip - الألبانية
- سورة المؤمنون : الترجمة التاميلية தமிழ் - التاميلية
- سورة المؤمنون : الترجمة التلجوية తెలుగు - التلجوية
- سورة المؤمنون : الترجمة الطاجيكية - عارفي Тоҷикӣ - الطاجيكية
- سورة المؤمنون : الترجمة الطاجيكية Тоҷикӣ - الطاجيكية
- سورة المؤمنون : الترجمة التايلاندية ไทย / Phasa Thai - التايلاندية
- سورة المؤمنون : الترجمة الفلبينية (تجالوج) للمختصر في تفسير القرآن الكريم Tagalog - الفلبينية (تجالوج)
- سورة المؤمنون : الترجمة الفلبينية (تجالوج) Tagalog - الفلبينية (تجالوج)
- سورة المؤمنون : الترجمة التركية للمختصر في تفسير القرآن الكريم Türkçe - التركية
- سورة المؤمنون : الترجمة التركية - مركز رواد الترجمة Türkçe - التركية
- سورة المؤمنون : الترجمة التركية - شعبان بريتش Türkçe - التركية
- سورة المؤمنون : الترجمة التركية - مجمع الملك فهد Türkçe - التركية
- سورة المؤمنون : الترجمة الأويغورية Uyƣurqə / ئۇيغۇرچە - الأويغورية
- سورة المؤمنون : الترجمة الأوكرانية Українська - الأوكرانية
- سورة المؤمنون : الترجمة الأردية اردو - الأردية
- سورة المؤمنون : الترجمة الأوزبكية - علاء الدين منصور Ўзбек - الأوزبكية
- سورة المؤمنون : الترجمة الأوزبكية - محمد صادق Ўзбек - الأوزبكية
- سورة المؤمنون : الترجمة الفيتنامية للمختصر في تفسير القرآن الكريم Vèneto - الفيتنامية
- سورة المؤمنون : الترجمة الفيتنامية Vèneto - الفيتنامية
- سورة المؤمنون : الترجمة اليورباوية Yorùbá - اليوروبا
- سورة المؤمنون : الترجمة الصينية 中文 - الصينية