سجود السهو والتلاوة والشكر
আবূ সা‘ঈদ আল-খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যখন তোমাদের কেউ সালাত আদায় করে কিন্তু সে বেশি পড়েছে না কম পড়েছে মনে করতে পারে না, তাহলে সে বসেই দু’টি সাজদাহ করবে। যখন শয়তার তার নিকট আসে, তখন সে বলে নিশ্চয় তোমার ওযু ভেঙ্গে গেছে। তখন সে যেন বলে তুমি মিথ্যা বলছ। তবে যদি নাকের মধ্যে দূর্গন্ধ পাও অথবা কানে আওয়াজ শুনতে পাও।”
عن أبي سعيد الخُدْرِي -رضي الله عنه-: أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: إذا صلى أحدكم فلم يَدْرِ زاد أم نَقص، فَلْيَسْجُد سجدتين وهو قَاعد، فإذا أتَاه الشيطان، فقال: إنْك قد أَحْدَثْتَ، فلْيَقل: كَذبت، إلا ما وجَد ريحًا بأنْفِه، أو صوتًا بِأُذُنِهِ.
شرح الحديث :
হাদীসটির ব্যাখ্যা: “যখন তোমাদের কেউ সালাত আদায় করে কিন্তু সে বেশি পড়েছে না কম পড়েছে মনে করতে পারে না” অর্থাৎ যখন কোনো মানুষ সালাত আদায় করে আর তার সালাতের মাঝখানে সন্দেহ হয় যে, তার সালাত কি পূর্ণ হয়েছে নাকি কম হয়েছে নাকি বেশি হয়েছে, তখন সে কি করবে? সে ব্যাপারে বিধান হচ্ছে “তাহলে সে বসেই দু’টি সাজদাহ করবে” অর্থাৎ যে ব্যক্তি তার সালাতের মধ্যে সন্দেহ পোষণ করে যে কম পড়লো নাকি বেশি পড়লো তার ওপর ওয়াজিব হলো তাশাহহুদের পর বসা অবস্থায় দু’টি সাজদাহ করা। “বসা অবস্থায়” অর্থাৎ সাজদাহ সাহু আদায়ের জন্য তাকে দাঁড়াতে হবে না বরং সে বসা অবস্থায়ই সাজদাহ করবে। এই হাদীসটির বাহ্যিক অর্থ ইমাম মুসলিম বর্ণিত আবূ সাঈদের হাদীসের বিপরীত, যেখানে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “মুসল্লী যখন তার সালাতে সন্দেহের মধ্যে পড়ে যায় এবং সে জানে না যে, কম পড়ছে নাকি বেশি পড়ছে, সে তখন সন্দেহ ছেড়ে দিবে এবং নিশ্চিতের ওপর আমল করবে।” অতএব, এমতাবস্থায় সে ধরে নিবে যে, তিন রাকাত পড়েছে, কারণ এটিই নিশ্চিত আর চতুর্থ রাকাত হচ্ছে সন্দেহপূর্ণ, তাই সন্দেহ ত্যাগ করে ইয়াকীনের ওপর আমল করাই ওয়াজিব, আর সেটা হচ্ছে সর্বনিম্নটা। “যখন শয়তার তার নিকট আসে, তখন সে বলে নিশ্চয় তোমার ওযু ভেঙ্গে গেছে” অর্থাৎ যখন তার সালাতে শয়তান উপস্থিত হয়, তখন সে তাকে কু-মন্ত্রণা দিতে থাকে। তার কাছে মনে হয় যে, তার ওযু ভেঙ্গে গেছে। যেমনটি সহীহ বুখারী ও মুসলিমে আব্দুল্লাহ ইবন যায়েদ রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, শয়তান তোমাদের সালাতে উপস্থিত হয়ে তোমাদের পায়ু পথে ফুঁ দেয়। তখন মুসল্লী মনে করে যে, তার ওযু ভেঙ্গে গেছে। তখন সে যেন বলে, তুমি মিথ্যা বলছ, যতক্ষণ না নাকে দুর্গন্ধ বা কানে শব্দ পায়। অর্থাৎ মনে মনে বলবে মুখে নয়। কারণ, মুসল্লীর জন্য সালাতে কথা বলা নিষিদ্ধ তাতে সালাত নষ্ট হয়ে যাবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “নিশ্চয় সালাতে মানুষের বানানো কোনো প্রকার কথা বলার অবকাশ নেই।” সুতরাং এর ভিত্তিতে বলা চলে যে, যখন শয়তান বান্দার সালাতে এসে কু-মন্ত্রণা দিয়ে বলে, ওযু ভেঙ্গে গেছে, সে যেন মনে মনে বলে, তুমি মিথ্যা বলছ। আর সে যেন তার সালাতে বহাল থাকে সালাত থেকে বের না হয়। তবে যদি ওযু ভাঙ্গার ব্যাপারে নিশ্চিত হয় তখন বের হবে। যেমন, সে গন্ধ পেল অথবা আওয়াজ শুনলো।