أمراض القلوب
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে দু’টি হাদীস বর্ণনা করেছেন। তার একটি আমি দেখেছি আর অপরটির অপেক্ষা করছি। তিনি আমাদেরকে বলেছেন যে, আমানত মানুষের অন্তরের অন্তঃস্তলে অবতীর্ণ হয়েছে। অতঃপর কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে, ফলে তারা কুরআন থেকে জ্ঞানার্জন করেছে এবং হাদীস থেকেও জ্ঞানার্জন করেছে। এরপর তিনি আমাদেরকে আমানত তুলে নেওয়া সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন, “মানুষ এক ঘুম ঘুমাবে আর তার অন্তর থেকে আমানত তুলে নেওয়া হবে। তখন একটি বিন্দুর মত তার চিহ্ন অবশিষ্ট থাকবে। পুনরায় এক ঘুম ঘুমাবে। আবারো তার অন্তর থেকে আমানত উঠিয়ে নেওয়া হবে। তখন আগুনের আঙ্গারার মত তার চিহ্ন অবশিষ্ট থাকবে, যেমন একটি আঙ্গারা তোমার পা দিয়ে মাড়িয়েছ আর তার ফলে ফোস্কা পড়েছে। তুমি ফোস্কাটি ফোলা দেখবে; কিন্তু বাস্তবে তাতে কিছুই থাকবে না।” অতঃপর (উদাহরণ স্বরূপ) তিনি একটি কাঁকর নিয়ে নিজ পায়ে গড়িয়ে দিলেন। (তারপর বলতে লাগলেন,) “সে সময় লোকেরা বেচা-কেনা করবে কিন্তু প্রায় কেউই আমানত আদায় করবে না। এমনকি লোকে বলাবলি করবে যে, অমুক বংশে একজন আমানতদার লোক আছে। এমনকি (দুনিয়াদার) ব্যক্তি সম্পর্কে মন্তব্য করা হবে, সে কতই না অদম্য! সে কতই না বিচক্ষণ! সে কতই না বুদ্ধিমান! অথচ তার অন্তরে সরিষার দানা পরিমাণ ঈমানও থাকবে না।” (হুযাইফা বলেন,) ইতিপূর্বে আমার উপর এমন যুগ অতিবাহিত হয়ে গেছে, যখন কারো সাথে বেচাকেনা করতে কোন পরোয়া করতাম না। কারণ সে মুসলিম হলে তার দ্বীন তাকে আমার (খিয়ানত থেকে) বিরত রাখবে। আর খ্রিষ্টান অথবা ইয়াহুদী হলে তার শাসকই আমার হক ফিরিয়ে দেবে। কিন্তু বর্তমানের অবস্থা হচ্ছে এই যে, আমি অমুক অমুক ছাড়া বেচা-কেনা করতে প্রস্তুত নই।  
عن حذيفة بن اليمان -رضي الله عنه- قال: حَدَثَنا رسول الله -صلى الله عليه وسلم- حدِيثَين قَد رَأَيتُ أَحَدَهُما وأنا أنتظر الآخر: حدثنا أنَّ الأمَانة نَزَلَت في جَذر قُلُوب الرِّجال، ثمَّ نزل القرآن فَعَلِموا مِن القرآن، وعَلِمُوا مِن السُنَّة، ثمَّ حدَّثنا عن رفع الأمانة، فقال: «يَنَامُ الرَّجُلُ النَّومَة فَتُقْبَضُ الأَمَانَةُ مِنْ قَلْبِهِ، فَيَظَلُّ أَثَرُهَا مِثلَ الوَكْتِ، ثُمَّ يَنَامُ النَّومَةَ فَتُقبَض الأَمَانَة مِن قَلْبِه، فَيَظَلُّ أَثَرُها مِثل أَثَر المَجْلِ، كَجَمْرٍ دَحْرَجْتَهُ عَلى رِجْلِكَ فَنَفِطَ، فَتَرَاهُ مُنْتَبِراً وَلَيس فِيه شَيء»، ثم أَخَذ حَصَاةً فَدَحْرَجَه على رجله «فَيَصبَح النَّاس يَتَبَايَعُون، فَلاَ يَكَاد أَحَدٌ يُؤَدِّي الأَمَانَةَ حَتَّى يُقَال: إِنَّ فِي بَنِي فُلاَن رَجُلاً أَمِيناً، حَتَّى يُقَال للرَّجُل: مَا أَجْلَدَهُ! مَا أَظْرَفَه! مَا أَعْقَلَه! وَمَا فِي قَلبِه مِثْقَالُ حَبَّة مِن خَرْدَل مِنْ إيمان»، ولَقَد أتى عَلَيَّ زَمَان وما أُبَالي أَيُّكُم بَايعت: لئِن كان مُسلِمًا لَيَرُدَنَّه عَلَيَّ دِينه، وَإِن كان نصرانيا أو يهوديا ليَرُدنَّه عَلَيَّ سَاعِيه، وأَمَّا اليوم فَمَا كُنت أَبَايِعُ مِنكُم إِلاَّ فُلاَنا وفُلاَناً».

شرح الحديث :


হাদীসটি স্পষ্ট করে যে, আমানত ধীরে ধীরে হ্রাস পাবে। যখন তার প্রথম অংশ দূর হবে তখন তার অন্তরের নূর দূর হয়ে যাবে। আর তার পরিবর্তে রেখে যাবে বিন্দুর ন্যায় অন্ধকার। এটি হচ্ছে পূর্বের রং এর বিপরীত রং। তারপর যখন আরো কিছু আমানত দূর হবে, তখন আঙ্গারার ন্যায় হয়ে যাবে। এটি কঠিন দাগ যা সহজে দূর হবে না। তবে অনেক সময় পর। এটি তার পূর্বে অন্ধকার থেকে অধিক অন্ধাকার। অন্তরে নূর ডেলে দেওয়ার পর তা দূর হয়ে যাওয়া এবং স্থান করে নেওয়ার পর তা বের হয়ে যাওয়া এবং তারপর তাতে অন্ধকার জায়গা করে নেওয়াকে তুলনা করেছেন একটি জ্বলন্ত অগ্নি কয়লার সাথে যা পায়ে পড়ে তাতে ফোস্কা সৃষ্টি করল তারপর কয়লা দূর হলো এবং ফোস্কা অবশিষ্ট থাকল। অতঃপর (উদাহরণ স্বরূপ) তিনি একটি কাঁকর নিয়ে নিজ পায়ে গড়িয়ে দিলেন। এ দ্বারা বর্ণনাটি অধিক ও স্পষ্ট করতে চাইলেন। “সে সময় লোকেরা সে ঘুম থেকে ভোর করবে যে ঘুমের ঘরে আমানত তুলে নেওয়া হয়েছে। তারা বেচা-কেনা করবে কিন্তু তাদের কেউই আমানত আদায় করার কাছাকাছি থাকবে না, বাস্তবিকপক্ষে আদায় করবে দূরের কথা। এমনকি এ গুনটি কম হওয়া ও তার প্রসিদ্ধির কারণে লোকেরা বলাবলি করবে যে, অমুক বংশে একজন আমানতদার লোক আছে। এমনকি (দুনিয়াদার) ব্যক্তি সম্পর্কে মন্তব্য করা হবে, সে কতই না অদম্য! সে কতই না বিচক্ষণ! সে কতই না বুদ্ধিমান! অথচ যে আমানতদারিতা ইমানের আলামত তাতো দূরের কথা তার অন্তরে সরিষার দানা পরিমাণ ঈমানও থাকবে না।” (হুযাইফা বলেন,) ইতিপূর্বে আমার উপর এমন যুগ অতিবাহিত হয়ে গেছে, যখন কারো সাথে বেচাকেনা করতে কোন পরোয়া করতাম না। অর্থাৎ কারো সাথে বেচা-কেনা করতে পরওয়া করতাম না কারণ আমরা জানতাম যে, আমানত তুলে নেওয়া হয়নি। মানুষের মধ্যে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করার প্রচলন ছিল। তাই মানুষের প্রতি ভরসা রেখে এবং তাদের আমানত দারিতার প্রতি লক্ষ্য করে তার অবস্থা সম্পর্কে অনুসন্ধান না করে তার সাথে বেচা-কেনায় অগ্রসর হতাম। কিন্তু বর্তমানের অবস্থা হচ্ছে এই যে, আমি অমুক অমুক ছাড়া বেচা-কেনা করতে প্রস্তুত নই। অর্থাৎ কতক লোক যাদের আমি চিনি এবং তাদের প্রতি আস্থা রাখি। আল্লামা কিরমানি বলেন, যদি বলি আমানত তুলে নেওয়া রাসূলের যামায় প্রকাশ পেয়েছিল।  

ترجمة نص هذا الحديث متوفرة باللغات التالية